শ্রীমঙ্গলে হাইল হাওরে ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব

গ্রাম বাংলার পুরোনো একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব হচ্ছে পলো বাওয়া। একসময় গ্রামজুড়ে বর্ষা মৌসুম শেষে শীতকে উপেক্ষা করে বাঁশ দিয়ে তৈরি পলো দিয়ে নদী-নালা ও খালবিলে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে দেখা যেতো মানুষদের।

কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পলো বাওয়া উৎসব। তবে বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আজ বৃহস্পতিবার (২১ শে নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার  ভুনবীর ইউনিয়নের জৈতাছড়ার পূর্বে হাওর-বিলে আয়োজন করা হয় পলো বাওয়া উৎসব। শেষ হয় দুপুর ১টার দিকে। আর এতে কয়েকশ শৌখিন মাছ শিকারি অংশ নেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোরেই  বিলে হই-হুল্লোর করে একসঙ্গে পলো-জাল হাতে মাছ শিকারে নেমে পড়েন সবাই। ঝপ ঝপ শব্দের তালে চলতে থাকে পলো বাওয়া। কয়েক ঘণ্টার এই উৎসবে আশপাশের গ্রামের নানা বয়সের লোকজন, শিশু থেকে বৃদ্ধ যে যার মতো পলো বাওয়া উৎসবে মেতে ওঠেন। বিলের মধ্যে নানা বয়সের মানুষ মাছ ধরতে নামলে তাদের মাছ ধরা দেখতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন গ্রামের নারীরাও। কেউ আবার জাল থেকে মাছ ধরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তাদের হাতে নানা প্রজাতির মাছ দেখা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় পলো দিয়ে মাছ শিকারের অপরূপ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতো গ্রামের ছোট-বড় সকল বয়সী মানুষ। কম বেশি প্রায় সবাই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করতো। আর সেই মাছ দিয়ে পরিবারের সকলে আনন্দের সঙ্গে রান্না করে খেতো। কিন্তু সেই বাংলার ঐহিত্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন নেই নদী-নালায় পানি, যতোটুকু আছে সেখানে অসাধু মাছ শিকারিরা চায়না দুয়ারি, কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে ছোট মাছগুলো মেরে দেশীয় মাছের বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। তবে এবার মাছ ধরার সেই ঐতিহ্য ফিরে যাওয়ার চবিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর এতে হাজারো শৌখিন মাছ শিকারি অংশ নেন।