মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া অর্ধশতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো গাছ কাটতে হলে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে সরকারি কোষাগারে ২০ শতাংশ রাজস্ব দিয়ে গাছ কাটতে হয়।
এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান হলে টেন্ডার আহ্বান করে গাছ বিক্রয় করতে হয়। কিন্তু বিটিআরআই পরিচালক এসবের কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকার গাছ গোপনে কেটে ফেলেন।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে গাছগুলো কেটে ফেলা হলেও বন বিভাগ বলছে, তারা কিছুই জানে না। শুধু গাছ কেটে তিনি ক্লান্ত হননি, প্রমাণ লোপাটের জন্য তিনি গাছের নিচের (মোড়া) কাটা অংশ ভূমি থেকে তুলে ফেলেন। তবে এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
উপজেলার সিন্দুরখান সড়কে খান ‘স’ মিলে গেলে দেখা যায় বড় বড় গাছের টুকরো পড়ে রয়েছে। ‘স’ মিলের মালিক নজরুল ইসলাম খান জানান, বিটিআরআই পরিচালকের নির্দেশে তাদের লোকজন এগুলো চিরানোর জন্য এনেছেন এবং কয়েক দিন আগে আরও প্রায় ৩৫ ফুট কাঠ চিরে নেওয়া হয়েছে বলে জানান।
তবে গাছ কাটার বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ফোনে বিটিআরআই পরিচালক ইসমাইল হোসেনের সরকারি নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তিনি কোনো বক্তব্য না দিয়ে মোবাইল নম্বর ব্লক লিস্টে ফেলে দেন।
পরে সরাসরি অফিসে গিয়ে গাছ কাটার এসব বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি জানান, এসব বিষয়ে তিনি বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক নন। সব নিয়ম মেনে গাছ কাটা হয়েছে জানিয়ে তিনি আর কথা বলতে চান নাবল্র জানান।
বন বিভাগের সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি তাৎক্ষণিক শ্রীমঙ্গল বন অফিসের রেঞ্জার দ্বীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে গাছগুলো জব্দসহ মামলা করা হবে বলে জানান।
শ্রীমঙ্গল বন অফিসের রেঞ্জ কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ২৭২৩ ঘনফুট কাঠ খান ‘স’ মিলে জব্দ করেছি।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই বিটিআরআই এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর গাছ কেটে চা বোর্ড অফিসের ভিতরে ফ্যাক্টরির পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
গাছ কাটার দায়িত্বে থাকা মুজাহিদ ইসলাম জানান, বড় স্যারে নির্দেশে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। অন্যথায় চাকরি থাকবে না।
এ সব বিষয়ে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে পরিচালক বিষয়টি অবগত করেছেন।
বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা হয়েছে কি না প্রশ্ন করলে তিনি জানান, যদি নিয়ম মানা না হয় তাহলে অবশ্যই প্রসিডিউর মানতে হবে। কোনো অনিয়ম হলে তিনি খোঁজ-খবর নেবেন বলে জানান।
সূত্র : যুগান্তর