শ্রীমঙ্গলে ইজারাকৃত মহাল থেকে বালু পাচারের অভিযোগ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রাতের আধারে ইজারাকৃত মহাল থেকে বালু পাচারের অভিযোগ করেছেন এক বৈধ ইজারাদার। এতে বাধা দেয়ায় হামলা ও জানমাল রক্ষার দাবী জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন শহরের ক্যাথলিক মিশন রোডের বাসিন্দা ইজারাদার হাজী মো. মখন মিয়া (৭৫)।

সোমবার (১০ জুলাই) শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে মখন মিয়া জানান, ২০২১ সালের ২৪ মে, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কর্তৃক সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে উপজেলার লাংলিয়াছড়া, পুটিয়াছড়া ও ফুলছড়া বালু কোয়ারী ইজারা পান। ইজারা প্রাপ্তির পর যথারীতি মোট দরের ২৫% সরকারের রাজস্ব জমা দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাকি ৭৫% টাকা রাজস্বখাতে জমা দেয়ার পর বালু উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়ার কথা। এপর্যায়ে তিনি জানতে পারেন শ্রীমঙ্গল শহরের জালালিয়া সড়কের বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী রাতের অন্ধকারে তার ইজারাকৃত পুটিয়াছড়া থেকে বালু উত্তোলন করে পাচার করে আসছেন। বিষয়টি তিনি তার ব্যবসায়ী অংশিদার ও সিলিকা বালু কোয়ারী পরিচালনাকারী মো. ফুল মিয়া মহালদারকে জানান।

মখন মিয়া বলেন, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মো. ফুল মিয়া মহালদার তাঁর নিজস্ব ফলদ বাগান থেকে শ্রীমঙ্গল শহরে ফেরার পথে সাইটুলা গ্রামে গিয়ে জানতে পারেন ইউসুফ আলীর আত্মীয় জালাল, কামাল, হারুন, সালাম, আলাল, সাজিদ, মাসুক, জুয়েল, সজীব, মোশাহিদ ও সোহেল সাথে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে পুটিয়া ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ অবস্থায় ফুল মিয়া মহালদার তাদেরকে বাধা প্রদান করলে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ ফুল মিয়া মহালদারকে প্রহার ও তার গাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তাকে উদ্ধারে স্থানীয় এলাকার শহীদ মিয়া ও মনির মিয়া এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা চালায়। পাশাপাশি হামলাকারীরা তাদের ২টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। হামলায় আহত শহীদ মিয়াকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ফুল মিয়া মহালদার আহত অবস্থায় দ্রুত গাড়ি নিয়ে শহরের দিকে এসে আত্মরক্ষা করেন।

মখন মিয়া অভিযোগ করেন, মো. ইউসুফ আলী দীর্ঘ ৮/১০ বছর যাবত একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে তাঁর নিজস্ব লোকজনদেরকে নিয়ে বিভিন্ন ছড়া থেকে সরকারের রাজস্ব ফাকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করে আসছেন। এখন তিনি বৈধভাবে ইজারাকৃত ছড়াগুলো থেকেও রাতের অন্ধকারে বালু উত্তোলন করছেন।

তিনি বলেন, একটি মহল এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ঘটনার পর শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের কথা জানিয়ে মখন মিয়া অভিযোগ করেন- ‘হামলাকারীরা এখনও আমার লোকজনদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।’ এজন্য তিনি জানমাল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্র্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে ইউসুফ আলী বলেন, ’তারা নিজেরাই ইজারার ৬৪ লাখ টাকার রাজস্ব খাতে জমা না দিয়ে অনুমোদন ছাড়াই বালু উত্তোলন করে আসছে’।

তিনি বলেন, ‘এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে’। এজন্য তিনি তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথাও জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ফুল মিয়া মহলদারসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।