ভরা বোরো মৌসুমে হঠাৎ জেঁকে বসা তীব্র শীতে কাবু নিম্ন আয়ের মানুষ। পাঁচ দিন ধরে মেঘলা ভাব ও কুয়াশায় আচ্ছাদিত সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল। রোদ না থাকায় সকাল থেকেই সন্ধ্যার পূর্বাবস্থা বিরাজ করছে প্রকৃতিজুড়ে।
রোদ নেই, বইছে মৃদু বাতাস। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে বের হতে পারছেন না। এছাড়া হাওরে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক ও শ্রমিকেরা। গত সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের দেখা মেলে ঘণ্টাখানেক।
ফলে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে জেলার প্রত্যন্ত জনপদ। সোমবার সকালে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এরপর ঠান্ডা বাতাস কমে গেলে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। জেলার সীমান্ত এলাকার শীতের তীব্রতা বেশি দেখা গেছে। অনেকেই খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। অনেকেই গরম কাপড় কিনছেন। নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতে দোকান থেকে শীত নিবারণের জন্য সোয়েটার, জ্যাকেট কিনতে দেখা গেছে।
প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিশেষ করে ভরা বোরো মৌসুমের সময়ে হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের জেলার টাংগুয়ার, দেখার হাওর, মাটিয়ান, শনি, পাকনার হাওর, করচার হাওর, ছায়ার হাওর, হালির হাওর, নলুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে কৃষি শ্রমিকেরা কাজে নামতে পারেননি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরপাড়ের কৃষক সাকিব মিয়া জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে বেশি টাকা দিয়েও জমিনে কাজের জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বোরো চাষাবাদে সাময়িক কষ্ট হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের বোরো চাষি জাহিদ মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হাড়কাঁপানো শীতে জীবন-জীবিকা কষ্টের হয়ে গেছে। শীতে বোরো জমিতে চারা রোপণ করতে পারছি না।
শ্রমিক আমিনুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে হাড়কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হতেই কষ্ট হচ্ছে। তাই কাজে একদিন গিয়ে আর যাই না। শীত একটু কমলে আবারও কাজে যাব।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, চলতি বছর ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। হাওরে শীতের তীব্রতায় বোরো জমিতে চারা রোপণে কৃষক ও শ্রমিকরা কষ্ট করেই তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।