শিমুলবাঁক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৩ সদস্যের অভিযোগ

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ইউনিয়নবাসীর মাঝে বিতরণের জন্য ১৪ মেট্রিকটন চাল ৩ জন ইউপি সদস্যদের বঞ্চিত রেখে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে।

এ নিয়ে সোমবার (১৭ এপ্রিল) শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন তারা।

অভিযোগকারী ৩ সদস্যরা হলেন, শিমুলবাঁক ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোছা. মাসুদা বেগম, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য তুরজাউন ও ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাহবুব ইসলাম।

অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, ঈদুল ফিতর ২০২৩ উপলক্ষে ইউনিয়নবাসীর মাঝে বিতরণের জন্য ভিজিএফের ১৪ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পায় শিমুলবাঁক ইউনিয়ন। পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীন ৯ জন ইউপি সদস্য, ৩ জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যসহ পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে ওয়ার্ডের সদস্যদের মাঝে সমবন্টন করে এই চাল বিতরণের কথা থাকলেও ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোছা. মাসুদা বেগম, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য তুরজাউন ও ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাহবুব ইসলামকে না জানিয়ে অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ওই চাল বিতরণ করে দেন। এতে উল্লিখিত ৩ জন ইউপি সদস্যের ন্যায্য অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে বলে তারা মনে করেন।

অভিযোগপত্রে তারা আরও উল্লেখ করেন, মূলত ইউপি সচিব নিয়ে তাদের মধ্যে একটি মতানৈক্য চলমান আছে। তাতে চেয়ারম্যানের পক্ষে না থাকার কারণে তাদেরকে এভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোছা. মাসুদা বেগম, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য তুরজাউন ও ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাহবুব ইসলাম বলেন, ‘আমরা বঞ্চিত। চেয়ারম্যান সাহেবের মতের সাথে আমরা একমত হইনি বলে তিনি আমাদেরকে আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। একেকজন ইউপি সদস্য হিসেবে আমাদের যা অধিকার তা তিনি আমাদের না দিয়ে নিজে কিংবা তার মানুষদের দিয়ে আমাদের ওয়ার্ডগুলোতে বিতরণ করিয়েছেন। আমরাও তো ভোটে নির্বাচিত। সাধারণ ভোটার আমাদেরও ভোট দিয়েছেন। এখন আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতে পারি অথবা আমাদের এভাবে বঞ্চিত করা হয় তাহলে জনগণের কাছে আমরা কী জবাব দেবো। এজন্য আমরা ইউএনও স্যারের কাছে একটি দরখাস্ত করেছি।’

সদস্য তুরজাউন বলেন, ‘ইউপি অফিস থেকে হোসাইন নামের একজন আমাকে ফোন করে বলে আমার জন্য ৩০টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, আমার ৩ ওয়ার্ড, ৩০ কার্ড বিতরণ করলে জনগণকে জবাব দিতে পারবো না। আমার ন্যায্যটা চাই। চেয়ারম্যান সাহেব যদি ন্যায্যটা দেন তাহলে নেবো না হলে নেবো না। এরপর আমাদের সাথে আর কেউই যোগাযোগ করেননি।’

অভিযোগ সম্পর্কে শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীন বলেন, ‘আমি যখন সবাইকে নিয়ে মিটিং করি, তখন তাদেরকে আমার অফিসের লোক পাঠিয়ে আসতে বলেছি। তারা আসেননি। তারপরও আমি তাদের অংশের নামগুলো রেখেছিলাম। যখন দেখছি তারা আসছেন না তখন আমি তো আর ওয়ার্ডবাসীকে বঞ্চিত রাখতে পারি না? অন্য লোকদের দিয়ে মাস্টার রোল করে তাদের ওয়ার্ডেই বিতরণ করে দিয়েছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ্ জামান লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)কে বলেছি। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে জানাবেন। যদি অভিযোগের সত্যতা পাই তাহলে অবশ্যই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’