সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ এলাকায় মামলা চলাকালীন একটি জমিতে বালু ফেলে দখলে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকালে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ (রহ.) থানায় এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মনিপুরী সম্প্রদায়ের এস রীনা দেবী।
শিবগঞ্জ বাজারের মকবুল টাওয়ার ও কিচেন মার্কেটের বিপরীতে আদিত্যপাড়া আলপনা-১৪ তে থাকা ৪৪ শতক এই ভূমি নিয়ে এর আগে মামলার বিবাদী আব্দুল আজিজ মাসুকও থানায় জিডি করেন।
শনিবার বিকালে শাহপরাণ থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ‘শিবগঞ্জ এলাকায় বালু ফেলা নিয়ে উভয়পক্ষ থানায় জিডি করেছেন; তদন্ত চলছে। ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’
বাদী এস রীনা দেবীর মেয়ে অজন্তা দেবী বলেন, ‘পৈত্রিক ভূমি ফিরে পেতে আমাদের পরিবার ২০০৮ সালে আদালতে মামলা করেছে। এটি এখন আপিল বিভাগে রয়েছে। এই অবস্থায় বিবাদী পক্ষের লোকজন বৃহস্পতিবার ট্রাক দিয়ে বালু ফেলে জায়গার দখল নিতে চায়। বাধা দিলে তারা আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিবাদীদের হুমকিতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বাসায় ঢিল ছোড়া হচ্ছে, বস্তা ভরে বাসার সামনে গরুর হাড্ডি রেখে দিচ্ছে। জায়গা ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে বলছে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিবাদী আব্দুল আজিজ মাসুকের ভাই এজাজ আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আমার ভাই মাসুক প্রবাসী। তিনি আমাকে জমিটি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি এই মামলার সিলেটের একটি আদালতে রায়ও পেয়েছেন। ওই মহিলা কিছুই মানছেন না।’
থানায় দেওয়া ডায়েরিতে এস রীনা দেবী দাবি করেন, এটি তাদের মৌরসী বা পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভূমি। এর মালিক ছিলেন তার স্বামী অমৃত সিংহ; যিনি ১৯৯৯ সালে মারা যান। এবং অমৃতের মা তারামণি দেবী মারা যান ২০০৩ সালে। এরপর থেকে রীনা দেবী ও সন্তানরা ভূমি ভোগদখল করছিলেন।
রীনা দেবী অভিযোগ করেন, বিবাদীরা ১৯৮৮ সালে বিনিময় দলিল সৃষ্টি করে জায়গাটির মালিকানা দাবি করেন। এই দলিল বাতিলের জন্য এবং জমি ফিরে পেতে ২০০৮ সালে তিনি মামলা করেন। মামলাটি এখন আপিল বিভাগে রয়েছে।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিবাদীর সাত থেকে আটজন লোক ট্রাক ভর্তি বালু নিয়ে জায়গাটি দখলের চেষ্টা করেন। তখন অজন্তা দেবী তাতে বাধা দেন। বিবাদীর লোকজন তখন অজন্তাকে গালিগালাজ করে এবং জায়গা ছেড়ে দিতে বলে নাহলে ‘খবর আছে’ বলে হুমকি দেয়।
অজন্তা দেবী পুলিশকে ঘটনাটি জানান। তখন বিবাদীর লোকজন ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শাহপরাণ (রহঃ) থানার এএসআই নাজমুলের নেতৃত্বে তিন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
আব্দুল আজিজ মাসুক বালাগঞ্জ উপজেলার খাঁপুর এলাকার মনোহর আলী তেরা মিয়ার ছেলে। তিনি প্রবাসি। তিনি তার বোন জাহেদার কাছ থেকে জায়গাটি কিনেছেন বলে দাবি করেন। রীনার মামলায় জাহেদা পাঁচ নম্বর বিবাদী।