শাল্লা বিএনপির গ্রুপিং দ্বন্দ্ব কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক

প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। একারণে দেশের বিভিন্ন ইউনিটের মতো শাল্লা উপজেলা বিএনপিও জর্জরিত গ্রুপিং রাজনীতি ও অন্তর্কোন্দলে। তবে শেষ পর্যন্ত গ্রুপিং ও কোন্দলের অবসান ঘটিয়ে আগামীতে সবধরনের আন্দোলনে একদফা দাবিতেৈঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে শাল্লা উপজেলা বিএনপির।

জানা যায়, শাল্লা উপজেলা বিএনপি মূলত দুটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল। একটি বলয় ছিল দিরাই-শাল্লার সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী। অন্য বলয়টি ছিল জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এ্যাড: তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলের অনুসারী। তবে শাল্লা উপজেলা বিএনপির মূল দলের পদধারী কোন নেতা এ্যাড: তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেলের গ্রুপে ছিলেন না।

জেলা বিএনপির উদ্যােগে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয় বিএনপির নিজস্ব কার্যালয়ে দুটি বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা আলোচনা সভা করেন। সেই আলোচনা সভার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুটি বলয়কে ঐক্যবদ্ধ করা। সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী সংগ্রাম ও আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন নেতাকর্মীরা।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়ালের পরিচালনায় এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, আপাতত আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। আগে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত করার আন্দোলন করতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্হা করতে হবে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে মাধ্যমে দেশে নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।

নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা এম ইলিয়াস আলীসহ সারা দেশে চারশো নেতাকর্মীকে গুম করেছে এই সরকার। এবং চলমান আন্দোলনে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সারা দেশে ২২জন নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন। আমাদের নেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাহিরে নিয়ে চিকিৎসা করতে দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি আরো বলেন এই সরকার অবৈধ ও ফ্যাসিস্ট সরকার।

বক্তারা বলেন, আজ থেকে দিরাই-শাল্লা বিএনপিতে কোন গ্রুপিং ও দ্বন্দ্ব নেই। তারেক রহমানের নেতৃত্বে দিরাই-শাল্লার বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে একদফা আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়বো। বক্তারা বলেন, এখন আমাদের উদ্দেশ্য একটাই এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে আর সরকারের পতন ঘটাতে হলে আমাদের দরকার ঐক্যবদ্ধতা। সকলের ঐক্যবদ্ধতা ছাড়া এই সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।

ডাক্তাররা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা আর বাংলাদেশে নেই, এই মুর্হুতে খালেদা জিয়াকে দেশের বাহিরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করা খুবই জরুরি কিন্তু আওয়ামী অবৈধ সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে দিচ্ছেন না।

খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি বলেন আমরা কাকে এমপি বানাবো কাকে নেতা বানাবো এই মুর্হুতে এসব ভাবছি না। দেশে ভোট দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করে আমরা নির্বাচনে আসবো ও নেতৃত্ব নিয়ে ভাববো।

এসময় আরো বক্তব্য প্রদান করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড: নুরুল ইসলাম নুরুল, সহসভাপতি আবুল কালাম, সেলিম আহমেদ ভুট্টাে, জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ ও দিরাই উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মঈনউদ্দীন চৌধুরী মাসুক, দিরাই উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড: ওবায়দুর চৌধুরী মিশু, শাল্লা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ, সদস্য সচিব ব্রজেশ চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারেক হাসান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মাহবুব সোবহানি চৌধুরী, আলী-আমজাদ, যুবদলের আহ্বায়ক গোপাল চন্দ্র দাশ, সদস্য সচিব রুবেল আহমেদ দুলাল, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন শিশু, আব্দুর রাজ্জাক, শাল্লা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ সাইফুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ মাহতাব মিয়া, সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান হাবুল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ একরামুল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, আক্তার হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম এরশাদ, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়ান মিয়া, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান আশিক সহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষকদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।