সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ২নং হবিবপুর ইউনিয়নের শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগে অনিয়ম, দূর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই রেকর্ডটিতে শোনা যায় নিয়োগ কমিটির সদস্য ইন্দুভূষণ দাস ম্যানেজিং কমিটির অন্য দুই সদস্যকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
কল রেকর্ডে নিয়োগ কমিটির সদস্য ইন্দুভূষণ দাস অপরপক্ষে নীল রতন দাস (লিলু)-কে বলছিলেন ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, হেড মাষ্টারের কাছ থেকেই হউক আর যেখান থেকেই দেই তোমাদের দুজনকে দুই লক্ষ টাকা দিব তোমরা আমাদের সাথে চলে আসো।’ কিন্তু অপরপক্ষের নীল রতন দাস এই প্রস্তাবে রাজি হননি।
কল রেকর্ড ফাঁস হবার পর থেকেই উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এলাকাবাসী বলছেন, নিয়োগে যদি লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেন না হয়ে থাকে তবে কেনো ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্যকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হবে।
রাখাল চন্দ্র দাস নামের এক নিয়োগপ্রার্থী বলেন, আমি অফিস সহায়ক পদে প্রার্থী ছিলাম কিন্তু নিয়োগ কমিটির অবৈধ ঘুষ লেনদেনের কাছে আমরা হেরে গেছি। সেসব লেনদেনের কল রেকর্ড যখন ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, তখন আমাদের মনে এসব দূর্নীতিবাজদের প্রতি আরো অধিকতর ঘৃণার জন্ম হচ্ছে।
এদিকে এলাকাবাসীর ভাষ্য ও কয়েকটি রেকর্ডের মাধ্যমে জানা গেছে শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগে এসব অবৈধ লেনদেন ও ঘুষ বাণিজ্যে প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন চৌধুরী সরাসরি জড়িত রয়েছে।
নিয়োগ কমিটির সভাপতি পলাশ রঞ্জন দাস প্রথম থেকেই এই অনিয়মের প্রতিবাদ করে আসছিলেন। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, বলেন এই নিয়োগে তিনি দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, রেকর্ডটি শুনেছি, এব্যাপারে আমি এলাকাবাসীকে নিয়ে আগামীকাল মিটিংয়ে বসবো।
তবে বরাবরের মতোই মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় ইন্দুভূষণ দাসের সাথের কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগের অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করেন সিলেটভয়েস। সংবাদ প্রকাশ করার পর থেকেই এলাকাবাসীর দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন নিয়োগ কমিটির সভাপতি পলাশ রঞ্জন দাস। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলে একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেবকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।