স্কুল ফাঁকি দিয়ে দাদন ব্যবসা, প্রতিষ্ঠানের তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, অফিসে বিলম্বে আসা এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টিসহ অভিযোগের পাহাড় শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারের বিরুদ্ধে। তবুও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ওই স্কুলে। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ ওঠলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
এ অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয়রা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়াশুনার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তাকে বদলির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগও দাখিল করেছেন স্থানীয়রা।
অজিত বরণ তালুকদার শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জরুরি ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। স্লিপ ফান্ডের জন্য ২৫ হাজার ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য আরও ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে।
অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত না করে অজিত বরণ তালুকদার তাঁর ইচ্ছেমত নামমাত্র কাজ করে অধিকাংশ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ে অধিকাংশ দিন তিনি অনুপস্থিত থাকেন। হাজিরা খাতায় হাজিরা দিয়েই দুপুর ১১-১২ টার দিকে চলে যান।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের দায়-দায়িত্ব বাদ দিয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করাসহ ফাঁটল ধরানোর কাজে লিপ্ত থাকেন তিনি। যার কারণে স্কুলের একটি অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। বর্তমানেও তিনিও বিবাদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এতে যেকোনো সময় ওই গ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এর আগে অজিত বরণ তালুকদারের বিরুদ্ধে সুদ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠেছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। তারপরই তদন্তে নামে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এ নিয়েও স্কুল কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে রয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনিয়মিত থাকায় স্কুলে পাঠদান ও ফলাফলসহ সবকিছুতেই ব্যাঘাত ঘটছে। এজন্য তাঁর বদলির দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করলেও তিনি সাঁড়া দেননি। পরে তার বাসভবনেও গিয়ে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, শাল্লা থেকে শিক্ষা কর্মকর্তা কাগজপত্র আমাকে পাঠিয়েছেন। সেগুলো আমি বিভাগীয় দপ্তরে পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বদলীর সুপারিশ যদি আমার কাছে পাঠিয়ে থাকেন তাহলে কাগজপত্র দেখে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।