শাল্লায় কুশিয়ারার ভাঙনে হুমকির মুখে ৫ গ্রাম

সুনামগঞ্জের শাল্লায় কুশিয়ারা নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে ৫ গ্রামের মানুষ। ভয়াবহ ভাঙনের ফলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ফেলছেন অনেকে। বাড়িঘর ও ভিটেমাটি হারিয়ে অসহায় জীবন-যাপন করছে অনেক পরিবার।

শুধু বসতভিটা নয়, নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে উপজেলার ফয়েজুল্লাহপুর, বিষ্ণুপুর, আননদনগর, প্রতাপপুর ও ভেড়াডহর গ্রামের অনেক ফসলি জমি, মসজিদ-মন্দির, শিক্ষিাপ্রতিষ্ঠান ও হাঁট-বাজার। এতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ৫ গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার।

এর আগেও নদী ভাঙন রোধে পনি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লক্ষ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগ ও বস্তুা ফেললেও নদী ভাঙ্গন থেকে রেহাই পাননি এসব এলাকার বাসিন্দারা।

নদী ভাঙনের খবর পেয়ে সম্প্রতি গ্রো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও দিরাই-শাল্লা আসনের সংসদ সদস্য  ড. জয়া সেন গুপ্তার ছেলে সৌমেন সেনগুপ্ত এ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। খুব দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ক্ষতিগ্রস্তের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

কুশিয়ারা নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর, ফয়েজুল্লাহপুর ও বিষ্ণুপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামে হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়ছেন অনেকেই।

জানা গেছে, নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ফয়েজুল্লাহপুর গ্রামের অন্তত চারশত পরিবার এখন হাওরে বসত ভিটে বানিয়ে বসবাস করে আসছে। শতশত একর জমি হারিয়ে পথে বসেছে এসব পরিবার। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত-ভিটাসহ ফসলি জমি।

স্থানীয়রা জানান, ৫ গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, মন্দিরসহ অনেক স্থাপনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় প্রতাপপুর বাজার, ফয়েজুল্লাহপুর গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। নদী ভাঙ্গন থেকে উপজেলার প্রতাপপুর ও ফয়েজুল্লাহপুরকে রক্ষা করতে হলে চারিদিকে ব্লক বা ড্যামপিং ব্যবস্থা করে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানান এলাকাবাসী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদী দিয়ে অতিমাত্রায় পাহাড়ি ঢল নামার কারণে প্রতাপপুর বাজার ও ফয়েজুল্লাহপুর বাজার এবং গ্রামের বেশিরভাগ অংশে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অনেক পরিবার অন্যত্র গিয়ে নতুন করে বসতভিটা বানিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।

প্রতাপপুর বাজার কমিটির সভাপতি পীযুষ দাস বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে প্রতাপপুর গ্রাম। এমনকি বাজারের বেশিরভাগ অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। আর মাস দুয়েক ভাঙন অব্যাহত থাকলে প্রতাপপুর বাজার বিলীন হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড গতবছর জিও ব্যাগের নামে বরাদ্দ আনলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।

শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী মো. রিপন আলী জানান, প্রতাপপুরসহ ৫টি জায়গায় নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখন উর্ধতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণের ব্যবস্থা করা হবে।

দিরাই-শাল্লা আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়াসেন গুপ্তা বলেন, গত বছর প্রতাপপুর ও ফয়েজুল্লাহপুরের ভাঙন নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্থ করেছেন জরুরিভিত্তিতে ভাঙনরোধ প্রকল্পের আওতায় কাজ শুরু করা হবে।