শাল্লায় ইউপি সদস্যের স্ত্রী ও বোনের নামে ভিজিডি কার্ড!

সুনামগঞ্জের শাল্লায় উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হক তাঁর স্ত্রী ও বোনের নামে ভিজিডি কার্ড করেছেন। গেল ৪ মাসের ভিজিডি’র চালও উত্তোলন করা হয়েছে তাদের নামে।

সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। কিন্তু সেই দরিদ্রদের জন্য ভিজিডি’র কার্ড বরাদ্দ দিতে গিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন আটগাঁও ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার নূরুল হক। বিষয়টি এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার নূরুল হক ২০২৩-২৪ চক্রে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যু করা ৫৯নং কার্ডটি তার স্ত্রী খালেদা খানম কলি ও আপন বোন মোছা. তাহেরা আক্তারের নামে ৬নং কার্ড ইস্যু করেছেন।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বৈবাহিক সূত্রে মেম্বার নূরুল হকের বোন তাহেরা আক্তার নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। ওই ইউপি সদস্য উক্ত ভিজিডি কার্ডের আওতায় তার স্ত্রী ও বোনের নামে প্রতি মাসে ৬০কেজি করে চালও তুলছেন। ইতোমধ্যে তিনি ৪ মাসের চাল উত্তোলন করে ফেলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দুঃস্থ মহিলা বলেন, ‘চেয়ারম্যান মেম্বাররা আমাদের নামে কোন কার্ড করতে চায় না। যারা টাকা দিতে পারে তাদের নামেই কার্ড হয়। নূরুল হক মেম্বার তার আত্মীয় স্বজনের মধ্যেই সব ধরনের সরকারী
সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। চেয়ারম্যান মেম্বারেরা যাদের কাছ থেকে টাকা নেয় তাদেরকে বলে কোনোদিন যেন মুখ না খুলে। যদি কেউ মুখ খুলে তাহলে ভবিষ্যতে কিছু পাবে না। আর এ ভয়েই ওইসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সর্বদাই নিরব থাকে বলেও জানান এলাকার সচেতন মহল।

এ নিয়ে আটগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য নূরুল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তার বোন ও স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ডের বিষয়টি তিনিও স্বীকার করে বলেন- ‘নাম দিছিলাম ভাই, তাই হয়ে গেছে।’

নিজের স্ত্রী ও বোনের নামে ভিজিডি চালের কার্ড কেন করবেন; এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মেম্বারের স্ত্রী ও বোন কি গরীব হতে পারে না?’

এ বিষয়ে ১নং আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আন-নোমান বলেন, ‘আমার একার পক্ষে সবকিছু দেখা সম্ভব নয়, যদি সত্যিই এটা হয়ে থাকে, তাহলে অনিয়ম হয়েছে।’

শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ। উনার স্ত্রী ও বোন দুঃস্থ ও অসহায় কিনা? তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’