শান্তিপূর্ণ নিরাপদ প্রস্থানের চিন্তা করুন : ১২ দলীয় জোট

বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী কালো পতাকা মিছিল করেছে ১২ দলীয় জোট। এসময় একদফা দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ প্রস্থানের আহ্বান জানান জোট নেতারা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকালে রাজধানীতে কালোপতাকা গণমিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পতন নিশ্চিত জেনে সরকার ও সরকারি দল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মরণ আঘাত হানছে বিরোধী দলের ওপর।

১২ দলীয় জোটপ্রধান জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম সিকদার। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামীম।

মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যার প্রমাণ ব্রিকস সম্মেলন। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্য পদ নিশ্চিত; কিন্তু কোনো স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার বিশ্বে মর্যাদা পায় না। আমরা দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেন, পুরো বিশ্ব যেমন সংকটে পড়ছে তেমনি বাংলাদেশ নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত। সুতরাং আমি বলব সরকার বাহাদুর আপনারা অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। আজকে দেশে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান আপনারা আপনাদের আন্দোলন জোরদার করুন।

কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, প্রশাসন ও সরকারি দলের লোকেরা বুঝে গেছে তাদের সময় শেষ। তাদের মধ্যে পরাজয় ভীতি এবং অপকর্মের প্রতিফল পাওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের মনে সাহস জোগাতে এবং পরাজয় ভীতি দূর করে মনকে চাঙ্গা রাখতে সঞ্জিবনী শক্তি হিসেবে ভারতের সমর্থন পাওয়ার বিষয়টি ঢাকডোল পিটিয়ে প্রচার শুরু করেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সতর্কতা উপেক্ষা করে সারা দেশে নির্বিচারে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। দিন ফুরিয়ে এসেছে, ভারত তাদের রক্ষা করতে পারবে না, এটা তারা মানতে পারছে না! জেল-জুলুম নির্যাতন করে জনগণকে দমিয়ে রাখার দিন শেষ। ক্ষমতা ধরে রাখার স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন মাত্র!

সমাবেশে নেতারা বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশী বদলানো যায় না। তাই আমরা ভারতের জনগণকে আমাদের বন্ধু মনে করি। পাশাপাশি এটাও চাই ভারতের সরকার বিশেষ একটি দল নয়, বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতি অনুধাবন করার চেষ্টা করবে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই- ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবে না।

নেতারা সরকারকে আর জল ঘোলা না করে জনগণের দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ প্রস্থানের চিন্তা করুন। চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে রাজি আছি।