শান্তিগঞ্জে যুবককে ‘ভুলবশত’ মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ, সংশোধিত তালিকা প্রকাশ

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে সাংহাই হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের ৩ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) প্রকাশিত তালিকায় ‘ভুলবশত’ শাহিনুর রহমান তুহিন (২৮) নামে এক যুবককে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

একই তালিকায় গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘শিক্ষক’ সম্বোধন করে পিআইসি গঠন করে তালিকা প্রকাশ্যে এসেছে। এ অবস্থায় পিআইসি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ এনে তা বাতিল করার দাবি জানিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শান্তিগঞ্জের জয়কলস ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সাংহাই হাওরের ৩ নম্বর পিআইসিতে ৪ নম্বর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নন, বরং তিনি একজন সিএনজি চালক। এছাড়া একই পিআইসির শিক্ষক হিসেবে উল্লিখিত মনির উদ্দিন শিক্ষক নন। পিআইসি তালিকায় উল্লিখিত জামলাবাজ গ্রামে মনির উদ্দিন নামে কোনো শিক্ষক নেই।

ভুল তালিকা (বামে), সংশোধিত তালিকা (ডানে)।

অভিযোগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, একই পিআইসির ৩ নম্বর সদস্য খিজির স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক জনপ্রতিনিধির নির্বাচনে ব্যানার-পোস্টার এবং জনসভায় সহযোগিতা করেছিলেন তিনি। তাই এই পিআইসি বাতিল করে নতুন পিআইসি গঠন করার দাবি জানান অভিযোগকারী।

অভিযোগের সত্যতা জানতে পিআইসিতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লিখিত শাহিনুর রহমান তুহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা নন। তিনি পিআইসির একজন কৃষক সদস্য। আগে সিএনজি চালালেও বর্তমানে তিনি বেকার।

একই তালিকায় ‘শিক্ষক’ হিসাবে উল্লেখ করা মনির উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমি শিক্ষক নই। মূলত আমি গেজেটভূক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তবে ওই পিআইসির ৬ নম্বর সদস্য নজিবুর রহমান একজন শিক্ষক। তিনি উপজেলার সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা বলেন, ‘পুরো বিষয়টি মূলত তালিকা প্রস্তুতকালে অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা সদস্যকে শিক্ষক এবং শিক্ষক সদস্যকে গণ্যমান্য ব্যক্তি উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর তালিকা সংশোধন করা হয়েছে।’