শান্তিগঞ্জে বজ্রাঘাতে পানিতে পড়ে যুবক নিখোঁজ

শান্তিগঞ্জের দরগাপাশা ইউনিয়নে বাবার সাথে মাছ ধরতে এসে বজ্রপাতের সময় পানিতে পড়ে মোতালিব হোসেন (২৪) নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ মোতালিব উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের পাইকাপন (পুবেরবাড়ি) গ্রামের নাছির মিয়ার ছেলে।

রোববার (০৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় একই ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের উত্তরে ভাই-বোনের দাড়া নামকস্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয় লোকজন জাল দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মোতালিব হোসেনকে না পেয়ে সুনামগঞ্জ ডুবুরি দলকে খবর দেন। পরে ডুবুরিরা এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। নিখোঁজ মোতালিবকে উদ্ধার করতে না পেরে প্রায় ৫ ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৭টায় তাদের উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করেন ডুবুরিরা।

নিখোঁজ মোতালিবের বাবা নাছির মিয়া বলেন, ‘আমি একজন নিম্ন আয়ের মৎস্যজীবী। দুই ছেলে মোতালিব হোসেন (২৪) ও মোজাম্মিল হোসেনকে (১৩) নিয়ে প্রতিদিনের মতো আজও বর্শি পেতে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলাম। ফজরের আজানের আগে বেরিয়েছি। সকাল ৯টায় ভাই-বোনের দাড়ায় এসে পৌঁছেছি। বর্শি তুলতে তুলতে সকাল ১১টা বেজে যায়। প্রায় ৩ কেজির মতো মাছ ধরেছি। মোতালিব বললো, বাবা- আজ চলে যাই। প্রচুর বজ্রপাত হচ্ছে। কাল আবার আসবো। তার এই কথা শুনে বাড়ির উদ্দেশ্যে নৌকা বাইতে থাকি। এমন সময় প্রচণ্ড শব্দ করে বজ্রপাত হয়। সাথে সাথে চিৎকার করে পানিতে পড়ে যায় মোতালিব। আমিও কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ছোট ছেলেটা নৌকার উপর মাথা নিচু করে বসে আছে। কিছুই বুঝতে পারিনি। শুধু আগুনে পুড়লে বা বিদ্যুতে লাগলে যেমন শব্দ হয় তেমন একটি শব্দ আমি বুঝতে পেরেছি। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরতেই দেখি ছেলের মাথায় থাকা বেতের ছাতা পানিতে ভাসছে। ভাবলাম আমার ছেলে। যখন হাত দিয়ে তুললাম দেখি আমার ছেলে নাই। ছাতাটাও পুড়ে গেছে। এরপর থেকে আমার কলিজার টুকরা মোতালিব নিখোঁজ।’

ডুবুরি দলের দলনেতা কবির হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়েই তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে এসে তার বাবাকে নিয়ে ২টার দিকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করি। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমাদের প্রাণান্ত চেষ্টা ছিলো। কিন্তু নিখোঁজ ব্যক্তিকে খোঁজে পাইনি। নদীর পানিতে স্রোত ছিলো। আমাদের ধারণা, স্রোতের কারণে নিখোঁজ ব্যক্তিটির দেহ অন্য কোথাও চলে যেতে পারে।’