লোডশেডিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মৌলভীবাজারের ফ্রিল্যান্সাররা

এদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তিকে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। তেমনি এদেশের ফ্রিলান্সাররা রাত জেগে কাজ করে উপার্জন করছেন বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু দেশব্যাপী এই ভয়াল লোডশেডিং এর কারণে বেকায়দায় পড়েছেন মৌলভীবাজারের ফ্রিল্যান্সাররা। এমনকি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।

মৌলভীবাজার জেলার কয়েকজন ফ্রিল্যান্সারের সাথে কথা বলে জানা যায়, পবিত্র ঈদ-উল-আযহার আগে চলতি কাজ গুলো ডেলিভারি দিতে হবে। অন্যথায় ঈদের আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই ভয়াবহ লোডশেডিং এর কারণে অগ্রিম কাজ ডেলিভারি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা নিয়ে শংঙ্কায় আছেন ফ্রিল্যান্সাররা। তাছাড়া বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে ঠিকমতো কাজ ডেলিভারি দিতে না পারায় অনেকে বেড রিভিউ পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন।

কুলাউড়া উপজেলার ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কারেন্ট না থাকলে ওয়াইফাই থাকে না। তাছাড়া কারেন্ট চলে গেলে মোবাইল নেটের অবস্থাও খুবই খারাপ হয়ে যায়। ফলে কাজ করা প্রায়ই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

আইটি উদ্যোক্তা মারুফ খান বলেন, ‘লোড শেডিং এর কারণে ফ্রিলান্সারদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ডেডলাইনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে না পারা। এর কারণে অনেক ফ্রিলান্সারের প্রোফাইলে বাজে প্রভাব পড়ে। মৌলভীবাজারের প্রত্যন্ত অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সাথে নেটওয়ার্ক এর সমস্যাও দেখা দেয় যার কারণে বায়ারের সাথেও সময়মতো যোগাযোগ সম্ভব হয় না, ফলশ্রুতিতে অর্ডার কেনসেল এর সম্ভাবনাও থেকে যায়। সর্বদিক বিবেচনায় এই লোডশেডিং এর বিড়ম্বনায় সকল পেশাজীবির চাইতেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার আইটি উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সাররা।’

মৌলভীবাজার ফ্রিল্যান্সার এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. তারেক আহমদ বলেন, ‘আমাদের ফ্রিল্যান্সাররা রাত-দিন কাজ করছে। কিন্তু বিগত কিছুদিনের বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে তাদের বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষ করে সঠিক সময়ে ক্লায়েন্টের কাজ ডেলিভারি দিতে পারছে না এবং পারছে না ঠিক মত ক্লায়েন্টের সাথে কমিনিউকেশন করতে। যার ফলে হাজার হাজার ডলার লোকসান হচ্ছে এবং ফ্রিল্যান্সারদের নেগেটিভ রিভিউ আসতেছে। এরকম চলতে থাকলে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য খুব খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হবে।’

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সারাদেশে বিদ্যুতের এই সমস্যায় অনেকেই ভোগান্তিতে আছেন। এটা আসলে জাতীয় সমস্যা। আপনারা জানেন, যে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ায় সারা দেশে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সাপ্লাই করা যাচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে সকল উপকরণ দরকার আন্তর্জাতিক বাজারে সেগুলোর দাম অত্যধিক বেড়েছে। আমি সবার ধৈর্য ও সহায়তা চাচ্ছি। এটা কবে ঠিক হবে আমার জানা নাই। তবে আশা করছি শীঘ্রই সমাধান হবে।’