লোকে আমাকে চায় না : জন্মদিনে কবীর সুমন

তার কথা, সুর আর গায়কীতে বাংলা গান পেয়েছে যৌবন। সমৃদ্ধ হয়েছে সংগীতের ভাণ্ডার। তাই নানা বিতর্ক-সমালোচনা পেরিয়ে তার বিস্ময়কর সৃষ্টিকর্মকেই প্রাধান্য দেন ভক্তরা। নিজস্ব ছাপ ফেলে দুই বাংলায় জনপ্রিয়তা পাওয়া সেই শিল্পীর নাম কবীর সুমন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) তার ৭৫তম জন্মদিন। বিশেষ দিন, সুতরাং ভক্তকূলের কাছ থেকে ভালোবাসা-শুভেচ্ছা পাচ্ছেন অবিরাম। যদিও প্রাপ্তির খাতায় খুব একটা ভ্রূক্ষেপ করেন না তিনি। স্পষ্ট বাক্যে বললেন, ‘অনেকেই ফোন করেন। কিন্তু আমি বারণ করি। আমার আর পোষাচ্ছে না। আর ভ্যাজর ভ্যাজর করতে ভালো লাগে না।’

অনেক দিন ধরেই কবীর সুমন গানে অনিয়মিত। এর কারণ কী? শিল্পীর জবাব, ‘আমি কাজ কমিয়ে দিইনি। লোকে আমাকে চায় না। সহজ কথা, কোনও দিনই মানুষ আমাকে খুব একটা চায়নি। আমার কারও প্রতি কোনও ক্ষোভ নেই। আসলে বিনোদন শিল্পীদের একটা বয়সের পর আর কেউ চায় না। ব্যতিক্রম হলেন ডাক্তার এবং আইনজীবীরা।’

শুধু সিনেমা কিংবা অডিওতে নতুন গান নয়, সরাসরি অনুষ্ঠানেও তেমন পাওয়া যায় না কবীর সুমনকে। গেলো বছর ঢাকায় তিন দিনব্যাপী একটি অনুষ্ঠান করে গেছেন। পশ্চিমবঙ্গেও তাকে সেভাবে ডাকা হয় না। কারণ তিনি ক্ষমতাসীন মমতা ব্যানার্জির পক্ষের লোক। এ কারণে বিপক্ষের মানুষ তাকে পছন্দ করেন না। এছাড়া ধর্ম পরিবর্তন ইস্যুতে তো আগে থেকেই অনেকের চক্ষুশূল হয়ে আছেন!

কলকাতায় মিলনায়তনের ভাড়াও বেড়েছে বলে জানান কবীর সুমন। ফলে টিকিটের দামও বাড়াতে হয়। এসব কারণে লাইভ অনুষ্ঠান প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। বরং অন্য একটি ইচ্ছে পুষে রেখেছেন মনে। সেটা কী?

কবীর সুমনের জবাব, ‘একটা গাড়িতে হারমোনিয়াম, তানপুরা, তবলা আর সাউন্ড সিস্টেম চাপিয়ে বেরিয়ে পড়ব। গাড়ির গায়ে লেখা থাকবে ‘বাংলা ভাষায় খেয়াল’। সেটা কোথাও কোথাও দাঁড়াবে। কাউকে বিরক্ত না করে, আইন ভঙ্গ না করে আমি রাস্তায় গান গাইব।’

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ ওড়িশার কটকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবীর সুমন। ১৯৯২ সালে তার আধুনিক গানের প্রথম একক অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’ প্রকাশ হয়। এরপর ২০১২ সাল অব্দি বহু অ্যালবাম উপহার দিয়েছেন। গানের মাধ্যমে প্রেম-ভালোবাসা ছাড়াও দেশ, মানুষ, মানবতা ও সম্প্রীতির বাণী তুলে ধরেছেন তিনি।

সূত্র : আনন্দবাজার