লাখাইয়ে গো-চারণ ভূমিতে ভুট্টা চাষে সফল কৃষকরা

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লাখাই উপজেলার লাখাই ইউনিয়নের কামালপুর ও স্বজনগ্রাম এলাকায় চলতি বছর প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য জানান, এই এলাকার কৃষকরা গো-চারণ ভূমিতে কিছু বাদাম চাষ করতেন। বিগত দুই বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কিছু প্রদর্শনী এবং উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে মো. আব্দুর রউফের প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ করা হয়। কিন্তু বাজারজাত করায় সমস্যা হলে পরে কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব এলাকার কিছু পাইকারের সাথে কৃষকদের যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। চলতি মৌসুমে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভুট্টার আবাদ বেড়েছে।

স্থানীয় কৃষক মো. আব্দুর রউফ, আলমগীর, সোহেল মিয়া, জগবন্ধু দাস ও বিপুল সূত্রধর জানান, সময়মতো বীজ পেলে আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে। কাঁচা অবস্থায় ভুট্টা গাছ উত্তম গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিপুল সূত্রধর ভুট্টা চাষ করে সাইলেজ করে প্রায় ২০টি গরু লালন-পালন করছেন। ভুট্টার আরও বহুবিধ ব্যবহার করা যায়। যেমন- কাঁচা পুড়িয়ে খাওয়া যায়, খই তৈরি করা যায়, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগীর খাদ্য তৈরি করা যায়। এছাড়া বড় বড় রেস্টুরেন্টে স্যুপ ও শিশুখাদ্য হিসেবে অত্যন্ত পুষ্টিকর এই ভুট্টা। জ্বালানি সংকট দূর করতেও ভুট্টা অতুলনীয়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য বলেন, আগামী বছরের জন্য শিবপুর এলাকার কৃষকদের উৎসাহিত করছি। তাদের কিছু উঁচু জমিতে আরও ব্যাপকভাবে ভুট্টা চাষ করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বলেন, লাখাইয়ে ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার অনেক অনাবাদি জমি রয়েছে যাতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টা চাষের ক্ষেত্রে দুইবার সেচ দিতে হয়। লাখাইয়ে সেচ সুবিধাজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে চলছে। আমরা এ ক্ষেত্রে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আগামীতে এর আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি আশাবাদী।

তিনি জানান, ভুট্টার ফলন হেক্টরপ্রতি ১০-১১ টন এবং প্রতি কেজি ভুট্টার বাজার দর ৪০-৪৫ টাকা।