লাউয়াছড়া বনে হারিয়ে যাওয়া দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উদ্ধার

লাউয়াছড়া বনে ঘুরতে বেড়িয়ে হারিয়ে যাওয়া দুই যুবককে উদ্ধার করেছে শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশ। সোমবার (০৫ জুন) রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে।

শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে গিয়ে সোমবার (৫ জুন) বেলা পৌনে দুইটার দিকে তাঁরা লাউয়াছড়ায় ঘুরতে যান। এরপর গভীর জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে আটটায় তাঁদের উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত দুই যুবক শাহজাব বিন আজমত (২৫) ও ইয়ালিদ উদ জামান (২৫)। তাঁরা দুজনেই ঢাকার ড্যাফেডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা যায়।

ইয়ালিদ উদ জামান বলেন, ‘আমরা গত রোববার শ্রীমঙ্গল ঘুরতে আসি। সোমবার সন্ধ্যায় আমাদের ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। দুপুরে আমরা লাউয়াছড়ায় ঘুরতে যাই। লাউয়াছড়ার ভেতরে যাওয়ার পর হঠাৎ আমরা রাস্তা হারিয়ে ফেলি। লাউয়াছড়ার ভেতরে মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক ছিল না। আমরা হাঁটতে হাঁটতে একটি টিলার ওপর উঠি। সেখান থেকে আমার বাড়িতে ফোন করি। আমার বাড়ি থেকে পরিবারের লোকজন ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। পরে শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশ আমাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে। সেখানে বারবার নেটওয়ার্ক কেটে যাচ্ছিল। এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে অন্ধকার হয়ে যায় চারপাশ। ভয় করছিল, কোনো প্রাণী আবার আক্রমণ করে বসে কি না। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বন থেকে আমাদের উদ্ধার করে শহরে নিয়ে আসে।

লাউয়াছড়ার ট্যুর গাইড মো. শাহীন বলেন, আমরা দুই তরুণের হারিয়ে যাওয়ার খবর শুনে সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। বনের ভেতরে তাঁদের নাম ধরে ডাকাডাকি করেছি। বাঁশি বাজিয়েছি। অনেক খোঁজার পর তাঁদের খোঁজ পাই।

ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ৯৯৯ থেকে বিকেল পাঁচটায় আমাদের ফোন করে জানানো হয়, বনের ভেতরে ঘুরতে গিয়ে দুই তরুণ হারিয়ে গেছে। পরে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা লাউয়াছড়ায় যান। সেখানে ট্যুরিস্ট গাইড, কমলগঞ্জ থানার পুলিশ, স্থানীয় দোকানদার ও লাউয়াছড়ার নিরাপত্তাকর্মীসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে বনে তাঁদের খোঁজ করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে লাউয়াছড়ার পার্শ্ববর্তী মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির পেছন থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ব্যক্তিদের আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ে নিয়ে আসি। এরপর নিরাপদে তাদের হোটেলে পৌঁছে দিয়েছি।