মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বিচরণের জন্য কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর নিরাপদে চলাচলের জন্য বন বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরের রেলপথে ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার রাখার জন্য রেল মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, বন্যপ্রাণীর নিরাপদে চলাচলের জন্য বনাঞ্চল এলাকায় সড়ক ও ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার রাখার জন্য গত বছর উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠির বরাত দিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২৫ জানুয়ারি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি পাঠান। ২৭ জানুয়ারি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. তৌফিক ইমাম স্বাক্ষরিত চিঠি বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালকে দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকায় ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে আরও জানা গেছে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সিলেটে ১০ থেকে ১২টি ট্রেন চলাচল করে। পাঁচ বছরে ৩৬টি প্রাণী এই উদ্যানের রেলপথ দুর্ঘটনায় মারা গেছে এবং অসংখ্য প্রাণী আহত হয়েছে। ট্রেন দ্রুত গতিতে চলাচলের কারণে বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি কমলগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘বন্যপ্রাণী রক্ষায় ট্রেনের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত ভালো উদ্যোগ। ট্রেন যদি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে বনাঞ্চল অতিক্রম করে তাহলে অনেক বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে।’
লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায় বলে জানা গেছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে।