যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের বাঙালিপাড়া পপলারে সোমা বেগম (২৫) নামের এক নারীর নিখোঁজের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে তার স্বামী আমনান রহমান নামের এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
গত ৩০ এপ্রিল লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে তার স্ত্রী নিখোঁজ বলে জানান অভিযুক্ত স্বামী। পরে নিখোঁজের তদন্ত করতে গিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশ তাকে বুধবার (৩ মে) গ্রেপ্তার করেছে। তবে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ মে) দুপুর পর্যন্ত স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
সোমা বেগমের স্বজনরা জানান, যুক্তরাজ্যে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র ছিল না আমনানের। সুনামগঞ্জের মেয়ে সোমার সঙ্গে তার আত্মীয়তা রয়েছে। নিজে বৈধ না হওয়ায় প্রায় চার বছর আগে চুক্তি করে অন্য ব্যক্তির স্ত্রী হিসেবে কাগজপত্র দেখিয়ে সোমাকে লন্ডনে নিয়ে যান তিনি। লন্ডনে যাওয়ারর আগে টেলিফোনে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু লন্ডনে আইনগতভাবে তাদের বিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ ছিল না।
স্বজনরা আরও জানান, ৪৫ বছর বয়সী আমনানের সঙ্গে ২৫ বছর বয়সী সোমার দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন কারণে গত দুই বছর ধরে দ্বন্দ্ব বিরাজমান ছিল। বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন তিনি। কয়েকদিন ধরে তিনি সোমা নিখোঁজ বলে দাবি করতে থাকেন। পরে স্বজনদের চাপে ৩০ এপ্রিল পুলিশের কাছে সোমা নিখোঁজ বলে জানান তিনি। তদন্তে নেমে বুধবার পুলিশ তাকে সোমাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের এক মুখপাত্র বলেছেন, সোমা বেগমকে হত্যার ঘটনায় আমনান রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তারা একে অপরের পরিচিত ছিলেন। সোমার নিকটাত্মীয়দের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আমনানকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
দুজনের সম্পর্কের বিষয়ে পুলিশ এর বেশি কিছু জানায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোমা বেগমের এক স্বজন শুক্রবার বলেছেন, স্বামীর নির্যাতনেই সোমার মৃত্যু হয়। সোমার নির্মম হত্যার ঘটনায় আমরা স্বজনরা হতবাক, শোকার্ত। আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না সোমা আর নেই। সোমা খুব ভালো একজন মেয়ে ও মা ছিলেন।
সোমা বেগমের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশের কাছ থেকে মরদেহ পাওয়া সাপেক্ষে জানাজার সময় নির্ধারণ করা হবে।
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার মামুনপুর গ্রামের মৃত ঠাকুর মিয়ার মেয়ে সোমা বেগম। তার দুই সন্তান সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।