রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি মোবাইল সিম দেওয়া হবে কিনা, বিষয়টি এখন যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যাচাই-বাছাই শেষে যে সুপারিশ আসবে, সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে জানান বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনুমতি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিম চালুর জন্য প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। এটা না থাকার পরও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশের মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। কয়েক লাখ সিম ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা, এমন অভিযোগ বিগত বছরগুলোর। এ ছাড়া দেশীয় একাধিক মোবাইল ফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে ক্যাম্প এলাকায় সিম বিক্রি অভিযোগও রয়েছে। মোবাইল দেশীয় মোবাইল সিমের পাশাপাশি মিয়ানমারের মোবাইল সিমও রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দেদার ব্যবহার হচ্ছে।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির একটি টিম রোহিঙ্গা ক্যাম্প সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেখানে অসংখ্য রোহিঙ্গার হাতে মোবাইল ফোন দেখেছে। সেসব ফোনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সিম ব্যবহার হচ্ছে। ক্যাম্প এলাকায় মিয়ানমারের মোবাইল সিম ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার বন্ধের জন্য এরই মধ্যে উপায় খোঁজা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশি মোবাইল সিমগুলোর (যেসব সিম ব্যবহার হচ্ছে) বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, রোহিঙ্গাদের মোবাইল সিম দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। আমাদের একটি টিম রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে। তারা দেখছে সেখানে কী হচ্ছে। তাদের দেওয়া প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে রোহিঙ্গারা সিম পাবে কিনা, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের সিম ব্যবহার হচ্ছে। সরকারের কাজ হলো সেই সিমগুলো যাতে আর ব্যবহার না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া। মিয়ানমারের নেটওয়ার্ক ক্যাম্প এলাকায় অকার্যকর করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সিম দেওয়ার আগে অনেকগুলো বিষয় আমাদের ভেবে দেখতে হবে। কারণ, আমরা নিবন্ধন ছাড়া সিম চালু করবো না। তাহলে তাদের সিম কীভাবে নিবন্ধন হবে, সেই বিষয়টি ভাবতে হবে। কতগুলো সিম দেওয়া যাবে, কারা সিম পাবে, কত বছর বয়স হলে সিম কিনতে পারবে, ব্যক্তিগতভাবে নাকি পারিবারিকভাবে দেওয়া হবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তারপর রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার বিষয়টি আসবে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পারস্পরিক যোগাযোগে সহযোগিতা করতে এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে মোবাইল ফোনে ফ্রিতে কথা বলার সুযোগ দিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেলিটকের বুথ উদ্বোধন করা হয়। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, হাকিমপাড়া, পালংখালী ও টেকনাফের হোয়াইক্যং ক্যাম্পে টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে ১০টি বুথ চালু করে টেলিটক।