একটা সময় ছিল যখন ঘরে ঘরে ছিল না মোবাইল ফোন কিংবা টেলিভিশন। দেখা যেত গ্রামের কোন এক বাড়িতে কারো হাতে একটিমাত্র মোবাইল ফোন আছে। আবার পুরো গ্রামের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির বাড়িতে একটি মাত্র টেলিভিশন আছে যা দেখার জন্য গ্রামের লোকজন প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা কিংবা দুপুরে ভিড় জমাতো তাদের বাড়িতে। তবে মোবাইল-টেলিভিশন বিরল থাকলেও তখনকার সময়ে ছিল রেডিও। প্রায় সকলের বাড়িতেই ছোট কিংবা বড় সাইজের নানা ধরনের রেডিও দেখা যেত। বিনোদন কিংবা শিক্ষা দু’টোরই সবচেয়ে বড় মাধ্যম ছিল রেডিও। আমাদের শৈশবের বেশিরভাগ অংশ জুড়েই আছে রেডিও নামক অসাধারণ এক যন্ত্রের ভাস্বর স্মৃতি।
সময়ের আবর্তনে মানুষের জীবন ধারায় পরিবর্তন এসেছে। রেডিও আর এখন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়। মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েছে এখন মোবাইল ফোন। রেডিও হারিয়ে ফেলেছে তার সেই পুরনো ঐতিহ্য। হারিয়ে যেতে বসেছে কালের অতল গহ্বরে! তাইতো রেডিও এখন আমাদের কাছে শুধুই স্মৃতি।
তবুও সারা বিশ্বে বেতার এখনো অন্যতম জনপ্রিয় গণমাধ্যম। বেতারের রয়েছে পৃথিবীর দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর শক্তি। গ্রামগঞ্জ ও দুর্গম এলাকায় এখনো বেতার তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বেতার কেন্দ্র।
বাংলাদেশে বেতারের যাত্রা শুরু ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ‘বিশ্ব বেতার দিবস’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘শতাব্দী জুড়ে তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষা বিস্তারে বেতার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘বিশ্ব বেতার দিবস’ পালনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ব বেতার দিবসে শ্রদ্ধা জানাই বাংলাদেশ বেতারের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় ও আঞ্চলিক বেতারে কর্মরত শিল্পী, কলাকুশলী, শ্রোতা ও শুভানুধ্যায়ী যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে শুদ্ধ সংস্কৃতি ও শিল্প চর্চার বিকাশ সাধন হচ্ছে।