রুম দখলকে কেন্দ্র করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়। সোমবার (১৪ মে) মধ্যরাতে শাহপরান হলের সি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত ১২টার পরে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা শুভর কয়েকজন অনুসারী শাহপরান হলের সি ব্লকে আসেন। ব্লকের ২২৩ নম্বর রুমে শুভর অনুসারীরা থাকেন। গ্রুপের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের জেরে ওই রুমের বাসিন্দা শাফায়েত হোসেন, জুনায়েদ ও তমাল আব্বাসীকে বের করে দিতে মধ্যরাতেই কক্ষে যান একই গ্রুপের অনুসারী সাজ্জাদুল ইসলাম সিফাত, রাহাত, সৈয়দ সাকিব প্রমুখ।
ঘটনার বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী শাফায়েত বলেন, সিফাত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। কয়েক মাস আগে রসায়ন বিভাগ ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ঝামেলা হয়। আমি নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় তিনি ওই ঘটনার পর থেকে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমার রুমমেট জুনায়েদ ও তমাল আমার পক্ষে কথা বলায় গত ১১ মে রাতে সিফাত আমাদের রুম থেকে বের হওয়ার আল্টিমেটাম দেন। আমরা রুম থেকে বের না হওয়ায় সোমবার (১৩ মে)রাতে আমাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাজ্জাদুল ইসলাম সিফাত বলেন, ২২৩ নম্বর রুমে নাজমুল হুদা শুভর অনুসারীরা থাকেন। গত কয়েকদিন ধরে ওই রুমের বাসিন্দা শাফায়েত, জুনায়েদ ও তমাল তাদের ফেসবুক স্টোরিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব ভাইয়ের অনুসারী হয়ে গেছে এ রকম পোস্ট করছিলেন। তাই তাদের ডেকে বলা হয়েছে, তারা যদি সজিব ভাইয়ের গ্রুপে চলে যায় তাহলে তারা যেন এ রুম ছেড়ে দেয়। তাদের জিজ্ঞেস করার জন্য গত রাতে আমরা কয়েকজন ২২৩ নম্বর কক্ষে যাই। কক্ষে যেতেই সজিব ভাইয়ের গ্রুপের অনুসারী সহ-সভাপতি আশিক, আয়াজ চৌধুরী, শিমুল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান হোসেন চৌধুরী আরিয়ান ও ছাত্রলীগকর্মী নাবিল হোসেন সহ আরও কয়েকজনকে দেখতে পাই। তাদের বলি আমাদের গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কিছু আলাপ আছে তারা যেন রুম থেকে বের হয়ে যায়।
এ বিষয়ে শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় ২২৩ নম্বর কক্ষে আমার গ্রুপের কেউ ছিল না। ওটা আমার রুমও নয়। ওই রুমে ঝামেলা হচ্ছে শুনে আমার অনুসারীরা দেখতে গেছেন। ঝামেলার খবর শুনে আমি ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. খলিলুর রহমান দ্রুত যাই। পরবর্তীতে হল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে গ্রুপ নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা শুভকে একাধিকবার কল দিলে রিসিভ করেন নি।
শাহপরান হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক কৌশিক সাহা বলেন, খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্ট বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তের জন্য একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। ওই রুমের শিক্ষার্থীদের তাদের রুমে থাকতে বলা হয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।