‘রাস্তা পাকা হবে শুনতে শুনতে বুড়ো হয়ে গেছি’

‘সামনে বর্ষা আসছে, আমাদের এই বাগান হচ্ছে করিমপুর চা বাগানের একটি ফাঁড়ি বাগান। ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমাদের অনেক দূর পথ হেঁটে কাজে যেতে হয়। রাস্তা পাকা হবে এই কথা শুনতে শুনতে আমি বুড়ো হয়ে গেছি।’

রোববার (২৬ মার্চ) দুপুরে ইন্দেশ্বর ফাঁড়ি বাগানের করিমপুর-ইন্দেশ্বর রাস্তায় নারী চা শ্রমিক পাপামা নাইডু আবেগপ্রবণ হয়ে এসব কথা বলেন।

মৌলভীবাজারের রাজনগরে করিমপুর চা বাগান থেকে ইন্দেশ্বর চা বাগান পর্যন্ত কাচা রাস্তা পাকা করণের দাবীতে চা শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

শ্রমিকরা জানিয়েছেন, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইনি হতে করিমপুর ইন্দেশ্বর হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ ভায়া সিলেট পর্যন্ত রাস্তাটি কাচা রয়ে গেল। এমপি মন্ত্রীরা শুধু আশ্বাস দেন। কিন্তু কোনো আমলেই রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। এমনকি ইট সলিং পর্যন্তও হয়নি।

শ্রমিকরা আরো বলেন, বাগানের চা শ্রমিক শিশুদের লেখা পড়ার জন্য একটি সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এসব দাবী দাওয়া নিয়েই ইন্দেশ্বর ফাঁড়ি বাগানের কয়েক শত চা শ্রমিক রাস্তায় নেমেছিলো।

চা বাগানে গিয়ে কথা হলে শ্রমিক মাখন রিকমন বলেন, ‘আমাদের একশো বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস্তাটি কাচা রয়ে গেল। আমরা সকল আমলেই এলাকার এমপি মন্ত্রীদের ধারস্থ হয়েছি। আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ করে দেননি তারা।’

চা শ্রমিক সুজন পাল বলেন, বর্ষাকালে এই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগি হয়ে যায়। তখন আমাদের শ্রমিকরা দুর্ভোগ পোহায়, স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারে না, নারী শ্রমিকদের কাজে যেতে কষ্ট হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল আহমদ বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবী, আগামী নির্বাচনের আগে রাস্তা পাকাকরন। প্রতি নির্বাচনের আগে এমপিরা আশ্বাস দেন, কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কারো খোঁজ পাওয়া যায় না। বাগানের সহস্রাধিক শ্রমিক কাদার কারণে বর্ষাকালে জরুরি কাজে বাইরে যেতে পারেন না।’

মানববন্ধনে যোগ দিয়ে চা শ্রমিক শিশু অর্চি নাইডু বলেন, ‘বাগানে আমরা একটা সরকারি স্কুল চাই। আমাদের এখান থেকে সরকারি স্কুল অনেক দূরে, আমরা যেতে পারি না।’