সম্প্রতি একাধিক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত সিলেটের নাট্যদল ‘কথাকলি’র কর্মী আমিনুল ইসলাম লিটনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে কথাকলি ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সাংস্কৃতিক দল ‘নগরনাট, সিলেট’।
রোববার (৯ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নগরনাট জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নগরনাট নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাস করে। আমরা বিশ্বাস করি, নারীমুক্তি ও নারী স্বাধীনতা ব্যতীত একটি জাতির বিকাশ সম্ভব নয়। এজন্য আমরা সবসময় নারী নির্যাতন, নিপীড়ন, অনৈতিক, কুরুচিপূর্ণ, বৈষম্যমূলক যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম এবং আছি। নারীকে যৌন নির্যাতন ও হয়রানির বিপক্ষে আমাদের অবস্থান তাই স্পষ্ট।
নগরনাট বিবৃতিতে বলে, সাম্প্রতিক সময়ে কথাকলি, সিলেট-এর নাট্যকর্মী আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক নারী সংস্কৃতিকর্মী যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উপস্থাপন করেন। এই অভিযোগগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
এসব ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা নগরনাট-এর অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমরা আমিনুল ইসলাম লিটনকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দিতে চাই না এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। আমরা মনে করি, এই ঘটনাগুলোর দায় সিলেটের প্রতিটি নাট্যকর্মী, প্রতিটি নাট্যদল এবং সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেট এড়িয়ে যেতে পারে না এবং আমরা নগরনাট, আমাদের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি, যতদিন পর্যন্ত নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারেন তিনি।
বিবৃতিতে নগরনাট জানায়, আমরা সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের কাছে নিম্নোক্ত দাবি রাখছি:
* কথাকলি, সিলেট অভিযুক্ত নাট্যকর্মী আমিনুল ইসলাম লিটনকে যাতে বহিষ্কার করে সেজন্য সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একই সঙ্গে তার বহিষ্কারাদেশ প্রেস রিলিজের মাধ্যমে অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
* কথাকলি, সিলেট আমিনুল ইসলাম লিটনকে প্রকাশ্যে বহিষ্কার না করলে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ থেকে তাদের সদস্যপদ বাতিল করা।
* নারী নাট্যকর্মীদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে এরকম কোনো নির্যাতনমূলক ও অনৈতিক ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সম্মিলিত নাট্য পরিষদের অধীনে একটি বিশেষ সেল গঠন করা।
* প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের উদ্যোগ না নিয়ে যারা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আড়াল করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন এবং ভয়ভীতির আবহ তৈরি করে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন, তারা নিপীড়কের সাথে সংযুক্তির দায় এড়াতে পারেন না।