রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সিসিকের অভিযান চলাকালে রাস্তা এবং ফুটপাত থেকে হকাররা চলে যান ঠিকই কিন্তু অভিযান শেষ হবার পর ফের আগের পজিশনেই চলে আসেন। এ যেন সিসিকের সাথে হকারদের লুকোচুরি খেলা।
এ-বছরের ১০ মার্চ নগর ভবনের পেছনে লালদিঘীরপাড়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে হকারদের পুনর্বাসন করলেও ৫ আগস্টের পর থেকে বদলে গেছে দৃশ্যপট।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লালদিঘীরপাড় হকার পুনর্বাসন কেন্দ্র ছেড়ে সড়কের দু‘পাশ দখলে নিয়েছে শত শত হকার। নগরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার সড়কেও এখন হকারদের দৌরাত্ম্য। ফুটপাত দখল করে বসায় পথচারী হাঁটার পথেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। বেড়েছে যানজট। নগরবাসীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
এ অবস্থায় গত ২৪ অক্টোবর সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এক সভায় হকার উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাস্তা এবং ফুটপাত ছেড়ে দিতে ৩ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর ২৭ অক্টোবর থেকে নগরের ফুটপাত দখলমুক্ত ও হকারে উচ্ছেদে নামে প্রশাসন।
এদিকে নিয়মিত অভিযান করার পরেও হকার উচ্ছেদ সম্ভব হচ্ছে না৷ এর মূল কারণ নিয়মিত মনিটরিংয়ের অভাব। সিটি করপোরেশন কতৃপক্ষ অভিযান পরিচালনা করার পর চলে যায় পরবর্তীতে নিয়মিত মনিটরিং করে না, আর এই সুযোগটাই হকাররা কাজে লাগায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, কোন এলাকায় অভিযান করা হবে এটি হকাররা আগেই জেনে যান এবং সেখান থেকে সটকে পড়েন। অভিযান শেষ হয়ে গেলে ফের তাদের জায়গায় চলে আসেন।
সূত্র জানায়, নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে অভিযানের তথ্য গোপনে আদানপ্রদান করে হকারদের ব্যবসা করতে সাহায্য করেন খোঁদ সিটি করপোরেশনেরই কিছু অসাধু কর্মকর্তা -কর্মচারী। এসব কারণে হকারমূক্ত হচ্ছে না । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সর্ষের ভেতর ভূত না সরালে কখনোই হকার মুক্ত হবে না সিলেট।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে সিলেট সিটি করপোরেশনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া সুলতানা মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ‘সিলেট ভয়েসকে’ বলেন, সিলেটের ফুটপাত এবং রাস্তা হকারমূক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। এসময় মনিটরিংয়ের বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান তিনি । অভিযানের খবর পৌঁছে হকারদের সাহায্য করার সঙ্গে সিসিকের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।