সিলেটে দুপুরে যেখানে ১৮০-১৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, সেই জায়গায় এখন আমরা পাচ্ছি ১৩০-১৪০ মেগাওয়াট। এতে আমাদের লোডশেডিং হচ্ছে ৪০-৫০ মেগাওয়াট। এই ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতি ঘণ্টায় সাশ্রয় হচ্ছে। এটা ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। যেমন- কোনো ঘণ্টায় চাহিদা দেখা যাচ্ছে ১৭০ মেগাওয়াট, আবার কোনো ঘণ্টায় চাহিদা ১৮০ মেগাওয়াট। এই ওঠানামা নির্ভর করছে মানুষ কোন সময় বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার করছে তার ওপর।
উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (বিতরণ অঞ্চল) আরাফাত আল মাজিদ ভূইয়া। সোমবার (৮ আগস্ট) সিলেট ভয়েসের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেটে কোন কোন সময় বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সকাল ১০টা, ১১টা, দুপুর ১২টা, ১টা, ২টা, বিকেল ৩টা ও ৪টা এই সময়গুলোতে বেশি বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এ সময় ১৭০-১৯০ মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা ওঠানামা করে। এরপর সন্ধ্যা ৬টা, ৭টা, রাত ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১১টা পর্যন্ত চাহিদা বেশি থাকে। এ সময় ১৯০-২১৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত চাহিদা ওঠানামা করে। ৫টি বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ ও ১টি আবাসিক প্রকৌশলীর দপ্তর এই ৬টিতে প্রতিদিন গড়ে সন্ধ্যা ৬টা-রাত ১১টা (ইভনিং পিক) পর্যন্ত চাহিদা থাকে ১৫০ মেগাওয়াট। আর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা (ডে পিক) পর্যন্ত চাহিদা থাকে ১৩০ মেগাওয়াট। ডে পিকে আজকের (৮ আগস্ট) অবস্থা কিছুটা ভালো বলা যায়। আজ ১৩০ মেগাওয়াটের জায়গায় পাচ্ছি ১১০ মেগাওয়াট। যার ফলে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে ২০ মেগাওয়াট সাশ্রয় করতে হচ্ছে। বিদ্যুতের হিসাবটা হচ্ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। যেমন কোনো ঘন্টায় আমার ১৩০ মেগাওয়াট লাগছে, আবার কোনো ঘণ্টায় লাগছে ১২০ মেগাওয়াট। সেই জায়গায় আমি যদি ১১০ মেগাওয়াট পাই, তবে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে সাশ্রয় করতে হচ্ছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কিন্তু চাল-ডালের মতো না যে গোলায় রেখে দিলাম। এটা তো গোলায় রাখার জিনিস না। এটা আমি রাখতেও পারব না। এটা রেখে আমাদের লাভ নেই, বরং লোকসান। আমি যত কাস্টমারদের দেবো, ততো টাকা আসবে। এতে আয় হবে।
তিনি আরও বলেন, ঘণ্টায় ঘণ্টায় জেনারেশন হবে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিয়ে দিতে হবে। যদি জেনারেশন বেশি হয় আর আমরা গ্রাহককে কম দেই, তাহলে আমাদের লোকসান হবে। শুধু আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের না, লোকসান হবে সরকারের। আমরা যত বিদ্যুৎ দিতে পারবো, আমাদের ততো কম সিস্টেম লস হবে। দেশের ভালো হবে।
আরাফাত আল মাজিদ ভূইয়া বলেন, গ্রাহকরা আমাদের দোষ দিতে পারেন কোনো রক্ষণাবেক্ষণ না হলে, কোনো সিস্টেম কলাপস হলে কিংবা অন্য কোনো সমস্যা হলে। যদিও আমরা আমাদের সাধ্যমতো নিয়ম মেনে মেইনটেনেন্স করি। তারপরও যদি আমাদের মেইনটেনেন্সে সমস্যা হয়, তখন অভিযোগ করার পরও আমরা যদি কাজ না করি তাহলে দোষারোপ করলে ঠিক আছে। কিন্তু লোডশেডিং নিয়ে গ্রাহক আমাদেরকে যে দোষ দেয় সেটা দুঃখজনক। কেননা বিদ্যুৎ রাখার কোনো জিনিস না। এটি জমিয়ে সংরক্ষণ করার সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে সেটা বিতরণ করা যায়। উৎপাদন করে গ্রাহকের কাছে বিতরণ করতেই হবে।