রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি কিয়েভকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয় তবে ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করবে এবং সংঘাতের একটি অংশ হয়ে উঠবে। বৃহস্পতিবার এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভো। খবর রয়টার্স।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লক্ষাধিক সেনা নিয়ে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি নতুন প্রজন্মের শক্তিশালী অস্ত্র দেওয়া শুরু করেছে। যার ফলে ইউক্রেনে যুদ্ধের ময়দানে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছে রুশ বাহিনী। দখলে নেওয়া অনেক এলাকা ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্যাকফুটে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন অনেকটা ঘোষণা দিয়েই উন্নত ‘জিএমএলএরএস’ রকেট সরবরাহ করেছে। এগুলো হিমার্স থেকে ছোড়া হচ্ছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৮০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
এই পরিস্থিতি মারিয়া জাখারোভা সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষা করার অধিকার রাশিয়ার আছে। ওয়াশিংটন যদি কিয়েভকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয় তবে তারা ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করবে’।
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেন তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে রাশিয়ায় হামলা চালাতে তারা মার্কিন রকেট ব্যবহার করবে না।
ইউক্রেনকে সহযোগিতার জন্য হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেমস বা হিমার্সের উৎপাদন বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগস্টে এমনটাই জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্রয়-বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উইলিয়াম লাপ্লান্তে।
জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১৬টি হিমার্স সরবরাহ করেছে ইউক্রেনকে। যা রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরোধ সক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ইউক্রেন হিমার্স থেকে গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেমস (জিএমএলআরএস) ছুড়ছে ইউক্রেন। এগুলো সফলভাবে কমান্ড পোস্ট ও অস্ত্র গুদামসহ রুশ সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানছে। হিমার্সের মাধ্যমে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে।
গত ৯ আগস্ট ক্রিমিয়ান উপদ্বীপের কাছে ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলার এখন রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, হিমার্সের মাধ্যমে সেখানে হামলা হয়। ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে জোরপূর্বক ক্রিমিয়া দখলে নেয় মস্কো।
নতুন করে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, ক্রিমিয়াকে যে কোনও মূল্যে ইউক্রেনে ফিরিয়ে আনা হবে।