পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এক লাখ রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবন নিশ্চিত এবং বাংলাদেশের ওপর থেকে রোহিঙ্গাদের বোঝা কমাতে পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনা করার প্রস্তাব করেছেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবেও উল্লেখ করেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিজাবেথ ট্রাসের সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন ড. মোমেন। কিগালিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমও উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিজাবেথ ট্রাস রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘যদি যুক্তরাজ্য এটির দিকে নজর দিতে পারে, তবে রোহিঙ্গা সংকটের সর্বোত্তম সমাধান হবে তাদের স্বদেশে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা।’
লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ট্রাসকে অবহিত করেছেন যে, মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী সঙ্কট ও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্রিটিশ সরকারের উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রাস রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে আশ্বাস দেন যে, আসিয়ান ও এর সহযোগী জি৭ দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াবে।
ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্য গত তিন বছরে মিয়ানমারে দুই দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে এবং ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য করেছে। তাদেরও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ২০২৯ সালের পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের করবিহীন জিএসপি সুবিধার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছেন।