মৌলভীবাজারে চলছে ঐতিহ্যবাহী ‘মাছের মেলা’

করোনাভাইরাস জনিত কারণে দুই বছর পর সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মিলনস্থল মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরে শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘মাছের মেলা’ শুরু হয়েছে।

প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয় এই মেলার। করোনাভাইরাস ও ওমিক্রন সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় গেল দুই বছর এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে বসতে শুরু করেছে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে মাছের মেলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এরই মধ্যে মাছের আড়ৎদাররা মাছ নিয়ে এসেছেন। মজুত করে রাখা হয়েছে ছোট-বড় নানা জাতের মাছ। আছে বাঘাইড়, বোয়াল, আইড়, চিতল, কাতলা, রুই ইত্যাদি।

মেলাকে কেন্দ্র করে মৎস্য ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত করছেন বড় বড় দোকান। নানা ধরনের গৃহস্থালি ও বিভিন্ন ধরনের আসবাব, সৌখিন জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনার পুতুল, টাট্টু ঘোড়া নিয়েও বসেছেন অসংখ্য দোকানি।

অপরদিকে কাঠের তৈরি খাট, আলমিরা, আলনাসহ আরও নানা জাতের বাসনকোসন ও আসবাবপত্র নিয়েও বসেছেন কয়েকজন দোকানি। মেলায় বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুক্র বা শনিবার থেকে মেলায় ভিড় বাড়বে।

উল্লেখ্য, পৌষ সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে মাছের মেলার প্রচলন শুরু হয় শতাধিক বছর পূর্বে। ঐ এলাকায় প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তিতে আয়োজন করা হয় ‘মাছের মেলা’ নামের এই মেলা। শুরুতে ওই মেলাটি সদর উপজেলার মনুমুখ এলাকায় হলেও পরবর্তীতে মেলাটি উপজেলার শেরপুরে স্থানান্তরিত হয়।

মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাওয়াদিঘি, হাইল হাওর ও মনু, ধলই, কুশিয়ারা নদীসহ বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন হাওরের মাছের উপর নির্ভর করে প্রতিবছরই বসে এ মেলা। মৎস্যজীবীরা এই মেলায় মাছ বিক্রির জন্য ৫ থেকে ৬ মাস আগে থেকেই বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। এই মাছগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় পানিতেই বাঁচিয়ে তাজা রাখা হয়।