মে মাসে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু

চলতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৪ জন এবং নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯ জন। নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সের ৭৭২ এবং ৪৪৪ জনই শিক্ষার্থী। ২৪১ জন নারী, শিশু ৯৭ এবং ৮১ জন ষাটোর্ধ্ব।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত রাখার লক্ষ্যে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেভ দ্য রোড।’

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, এসময় শিক্ষার্থী এবং তরুণদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে গতি হারিয়ে। অন্য বাহনগুলোতেও প্রায় একই সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। অর্থাৎ নির্ধারিত গতির চেয়েও অনেক বেশি গতিতে চলার কারণে প্রাইভেট কার, বাস ও ট্রাক দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। এই সব বাহনের অধিকাংশ চালকের বয়সই ১৮ থেকে ৪০-এর মধ্যে।

বাংলাদেশের ২৬টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে প্রকাশিত-প্রচারিত তথ্যর পাশাপাশি সারা দেশে সেভ দ্য রোড-এর স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্যানুসারে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর পাশাপাশি নিয়ম না মানা এবং হেলমেট ব্যবহারে অনীহার কারণে ১ হাজার ৩৬৭টি দুর্ঘটনায় আহত ৯৯৪ এবং নিহত হয়েছে ২৭৫ জন; অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ৮৩২টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৩৭ এবং নিহত হয়েছে ১২১ জন; খানাখন্দ, অচল রাস্তাঘাট আর সড়কপথ নৈরাজ্যের কারণে ১ হাজার ১১৬টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১ হাজার ১০৬ জন এবং নিহত হয়েছে ৫২০ জন; পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সঙ্গে চলাচলের কারণে লড়ি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারিচালিত রিকশা-সাইকেল ও সিএনজির দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১১৬টি, আহত হয়েছে ৮৫৭ জন এবং ২২২ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও ১ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪৪টি। আহত ৫২১ জন, নিহত হয়েছে ২৩ জন; রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২টি। আহত হয়েছে ২৮৬ জন, নিহত হয়েছে ২১ জন। আকাশপথে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৫৬ জনকে।

সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানাসহ অন্য নেতৃবৃন্দর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৩১ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে মে মাসের এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে, তা হলো ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণদের বেপরোয়া বাহন চালনার কারণে নির্মম মৃত্যুর সংখ্যা অন্য মাসগুলোর চেয়ে বেড়েছে মে মাসে। সেই সঙ্গে সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পরিবহনগুলোও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে কেবল ঢাকা নগরীতে আহত হয়েছেন ২৯ জন; নিহত হয়েছে ২ জন।

ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এখনই বেপরোয়া বাহন চালানো থেকে চালকদেরকে নিবৃত করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা তৈরিতে সকলকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার প্রতিও গুরুত্ব দিয়েছেন সংগঠনটি।