যখন দলের ভাগ্যটা ঝুলছে সুতোয়, তখন সেই মেসিই হলেন ত্রাতা। মহাগুরুত্বপূর্ণ গোলে আর্জেন্টিনার ফিকে হয়ে যাওয়া আশাটাকে বাঁচিয়ে রাখলেন। এরপর সতীর্থ এনজো ফের্নান্দেজকে দিয়ে করালেন আরও একটি গোল। এই দুই গোলে ভর করেই মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলের মহাগুরুত্বপূর্ণ জয়টা পেয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। সেই সাথে নকআউট পর্বে খেলার আশাও বাঁচিয়ে রাখলো দলটি।
প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার। এই পরাজয়ের ফলে আর্জেন্টিনা কার্যত নকআউট পরিস্থিতিতে পড়ে গেছে। হারলেই বিদায়! এমন পরিস্থিতিতে আজ লুসাইল স্টেডিয়ামে মেক্সিকোর মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। কোচ স্কালোনি আগের ম্যাচ থেকে এই ম্যাচে এনেছেন পাঁচটি পরিবর্তন। শুরু থেকেই কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। তবে বলার মেতো কোনও আক্রমণ শানাতে পারেনি তারা। বলা যায়, ছন্দহীন এলোমেলো ফুটবলই খেলেছে শুরু থেকে।
খেলার ২০ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় মেক্সিকো। ফাউল করলেন ওটামেন্ডি। ছোট ফ্রি-কিক নিয়ে ক্রস ভাসানোর চেষ্টা করল মেক্সিকো। তাতে কিছু সুবিধা হলো না।
খেলার ২৯ মিনিটে বাঁ দিক থেকে ক্রস ভাসিয়েছিলেন আকুনা। মেসি হেড করেন। বল বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। তার আগেই আকুনা ফাউল করায় রেফারি ফ্রি-কিকের নির্দেশ দেন।
ম্যাচের ৪৪ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রি-কিক পেয়েছিল মেক্সিকো। ভেগার দুর্দান্ত শট বাঁচিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো। গোলশূন্য বিরতিতে যায় উভয় দল।
ম্যাচের ৫০ মিনিটে বক্সের বাইরে মেসিকে ফাউল করেন গুতিরেজ। নিজের জায়গায় ফ্রি-কিক পান মেসি। সেখান থেকে বল বারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দিলেন মেসি। সুযোগ হারায় আর্জেন্টিনা।
৬০ মিনিট আরও একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিলেন ডি মারিয়া। বক্সের ডান দিক থেকে পাস বাড়ান। লাউতারো তখন বলের ধারেকাছেও ছিলেন না।
অবশেষে ৬৪ মিনিটে গেলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। ত্রাতা সেই মেসিই। ডান দিক থেকে ডি মারিয়া পাস দিয়েছিলেন মেসিকে। বাঁ পায়ের মেসির গড়ানো শট গোলকিপার ওচোয়াকে পরাস্ত করে জালে জড়িয়ে যায়।
ম্যাচের ৮৭ মিনিট। বক্সের ডান দিকে মেসির পাস। বল রিসিভ করে দুজন ডিফেন্ডারকে পায়ের দোলায় কাটিয়ে গোলের কোণ দিয়ে দিয়ে বল জালে জড়ালেন তরুণ মিডফিল্ডার এনসো ফের্নান্দেজ। ২-০ গোলে এগিয়ে ম্যাচ কার্যত মেসিদের পকেটে চলে যায় তখনই।
অথচ এই মেসিকেই প্রথমার্ধে তেমন খুঁজেই পাওয়া যায়নি, যেমন পাওয়া যায়নি তার দল আর্জেন্টিনাকেও। প্রথমার্ধে বলের দখলে মেসিরা এগিয়ে ছিলেন বটে। কিন্তু গোলমুখে শট নিয়ে প্রতিপক্ষ গিলের্মো ওচোয়াকে তেমন বিপদে ফেলতেই পারেননি কেউ। যে দলে মেসির সঙ্গে আনহেল ডি মারিয়া, লাওতারো মার্টিনেজরা আছেন, সেই দলকে দ্বিতীয় সেরা বানিয়ে প্রতিপক্ষ গোলমুখে শটে এগিয়ে ছিল মেক্সিকো, ভাবা যায়! শুরুর ৪৫ মিনিটে তাই অবধারিতভাবেই গোল পায়নি আর্জেন্টিনা।