দুলাভাইয়ের ‘পরকীয়ার’ বিষয়ে জেনে যাওয়ায় শ্যালককে হত্যার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে দাফনের এক মাস পর সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে তুহিন মিয়া (১৮) নামে এক তরুণের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজেদুল ইসলামের উপস্থিতিতে জগন্নাথপুর পৌরসভার শেরপুর কবরস্থান থেকে ওই যুবকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৩ বছর আগে জগন্নাথপুরের চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের কবিরপুর গ্রামের মিলন মিয়ার সঙ্গে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার মেয়ে মমতা বেগমের বিয়ে হয়। সেই সুবাদে গত এক বছর আগে মোস্তফা মিয়া পরিবার নিয়ে মেয়ের বাড়ি কবিরপুরে এসে বসবাস করছিলেন। দুই মাস আগে মমতা বেগম বিদেশে চলে যান। এরপর থেকে মমতার স্বামী মিলন মিয়া ও ছোট ভাই তুহিন মিয়া একই কক্ষে ঘুমাতেন। গত ১১ জুলাই রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘুমের মধ্যে তুহিন মিয়ার মৃত্যু হয়। পরদিন জ্বরের কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে তুহিনকে দাফন করা হয়।
পরে গত ১৮ জুলাই তুহিনের বড় ভাই শামীম মিয়া বাদী হয়ে ভগ্নিপতি মিলন মিয়াকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের নামে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গত ২৫ জুলাই মামলাটি জগন্নাথপুর থানায় রুজু করা হয়।
শামীম মিয়া বলেন, আমার বোন বিদেশে যাওয়ার পরদিন মিলনের ভাবী বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসেন। পরে আমরা জানতে পারি তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এ পরকীয়ার বিষয়ে আমার ভাই তুহিন জেনে যাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার কয়েকদিন পর আমার ৮ বছরের ভাগনি (মমতার মেয়ে) আমাদের বিষয়টি জানায়। পরে আদালতে মামলা করা হয়।
শামীমের স্ত্রী নুরজাহান বলেন, তুহিনের দাফন কার্য শেষে তার বিছানায় রক্তের দাগ এবং বালিশের নিচে রক্তে ভেজা একটি গামছা দেখেই আমার সন্দেহ হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রাতে সে সুস্থ ছিল এবং রাত ২টা পর্যন্ত তুহিন টিকটিকে ভিডিও করেছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অলক দাশ বলেন, আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।