মূল্যস্ফীতির কারণে অর্থনীতি চাপের মাঝে আছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বিরোধীদলের সরকার পতন ঘটানোর চিন্তা একেবারে অবাস্তব। যেটা অবাস্তব সে বিষয়ে আমি বিশ্বাস করি না। আমি বাস্তবতায় বিশ্বাস করি। যেটা সামনে আছে সেটায় বিশ্বাস করি। সেই বিচারে আমি ঘনকের লাইনে কল্পনাপ্রসূত কথাবার্তায় বিশ্বাস করি না।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার মন্ত্রীর বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রিজার্ভ ঘাটতি প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, আমাদের অর্থনীতি চাপের মাঝে আছে সেটা সরকার প্রধান নিজেই স্বীকার করেছেন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এর ফলে নিম্নআয়ের মানুষ যাদের কাছে আমরা দ্বায়বদ্ধ তারা কষ্টে আছেন। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার নানা কৌশলে কাজ করছে। ফলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, বাড়েনি। আগামীতে আরো কমবে। তবে এটা কোনো সংকট নয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ লাফালাফি করে কমছে। এটা একটা জায়গায় গিয়ে থামবে। আমাদের হাতে এখনো তিন মাসের আমদানী ব্যয় পরিশোধ করার মত রিজার্ভ আছে। এছাড়া এসব বিষয়ে অর্থনীতি বিষয়ে পন্ডিত আইএমএফ আছে। তারা কিন্তু সংকট বলেনি। তারা অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে নানা রকম দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।’

পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জন্য হুমকি বিরোধীদলের এমন মন্তব্যের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অরেক উচ্চসম্পন্ন টেকনিক্যাল ব্যাপার। বিশ্বের কেউ কেউ পারমানবিক কেন্দ্র বন্ধ করছে কারণ এগুলো পুরনো টেকনিক্যাল দ্বারা পরিচালিত। তবে আমার কাছে খবর আছে কেউ কেউ নতুন টেকনিক্যাল ব্যবহার করে নতুন করে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। আমাদের সরকার মনে করে প্রতিটি জিনিস হাতের মুঠোয় আনার জন্য সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিৎ। আমরা সেটা করছি। ফলে আমরা সেটি আমাদের হাতের মুঠোয় আনতে পেরেছি। পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হাজারও ভালো দিক আছে আমরা সেগুলো পাবো। আধুনিক তরুণ প্রজন্ম এটি নিয়ে উচ্ছ্বসিত। আমি নিজেও উচ্ছ্বসিত।’

নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের চাপ ও নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো দেশ তার নিজের সুবিধার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিতেই পারে। সেটা তাদের ব্যাপার। আমরাও তো নিষেধাজ্ঞা দেই মাঝে মাঝে। চাপে নয় আমাদের বরং তৈরী থাকতে হয়। গৃহস্থ যেমন ঝড়-ঝাপ্টা মোকাবিলায় তৈরী থাকে আমাদের সরকারও সেভাবে তৈরী আছে। জনগণের সুরক্ষার জন্য, উন্নয়নের জন্য সরকারকে ঝুঁকি নিতে হয়, হিসাব-নিকাশ করতে হয়। এখানেও আমাদের সরকার প্রধান ঝুঁকি নেন, হিসাব নিকাশ করেন। আমরা জেনেশুনে আমাদের জনগণের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ আমরা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে করি না।’

সরকার মেগাপ্রকল্পের নামে জনগনের অর্থের অপচয় করছে বিরোধীদলের এমন মন্তব্যের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, ‘এগুলো কেউ বিরোধীতার জন্য বলে, কেউ নিজের স্বার্থের জন্য বলে, কেউ বাহাদুরী করার জন্য বলে। বলতে পারে সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু দেশের জনগণ যারা দেশের মালিক তারা আরো বেশি পদ্মাসেতু চায়, মেট্রোরেল আরো চায়, টানেল আরো চায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আরো চায়। এসব নির্মান করতে ঝুঁকি অবশ্যই আছে। কিন্তু সেটা মোকাবিলা করার জন্য কৌশল, জ্ঞানবুদ্ধি, বিদ্যা সবই আওয়ামী লীগ সরকারের আছে।’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামী লীগ জোটগতভাবে নির্বাচন করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দলীয় প্রধান আছেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা আছেন তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ফের ক্ষমতায় আসতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসবে। কারণ দেশের মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে, জীবনমান উন্নত করার স্বার্থে আওয়ামী লীগকে আবারো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় বসাবে।