বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেছেন, সদাচারী একটি বাংলাদেশ হতে হবে, যার মূল হবে মানবিকতা। বলেন, বাঙালির ধর্ম হলো মানবতা। মানুষের মাঝে মানবতা থাকলে তিনি বাঙালি।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল চারটায় সিলেট নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারস্থ গ্রন্থবিপণি বাতিঘরে নিজের লেখা ‘মুজিব মৌলিক’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মুজিব মৌলিক’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন, ‘মুজিব মৌলিক বইটি অনন্য সাধারণ, যা আমাদের জীবনে কাজে লাগবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীকে জানার জন্য এই একটি বই যথেষ্ট। এই বইয়ে বঙ্গবন্ধুর লেখা আমার দেখা নয়াচীন গ্রন্থকে আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বইটি পড়লে বঙ্গবন্ধুর সবকিছু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। মুজিব মৌলিক গ্রন্থটি আমাদের পাঠ করা দরকার।’
লেখক অনুভূতি প্রকাশকালে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘মানুষের ভিতরে সদাচার আছে বলে মানুষ মানবিক হয়ে উঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মধ্যে মৌলিক মানুষ ছিলেন। বাঙালির তিন হাজার বছরের ইতিহাসে তাকে বাদ দিলে কিছু নাই। বঙ্গবন্ধুর মুখ থেকে আমি প্রথম বাংলাদেশ শব্দটি শুনেছি। আমি ৭২ সাল থেকে বাংলা একাডেমিতে কাজ করছি। আমার কোনো বইয়ের প্রকাশনা হয়নি। আজ খুব অন্তরভেদে আলোচনা হয়েছে এখানে। বঙ্গবন্ধু ১৮ মিনিট ভাষণ তিনি দেন নাই, তিনি কবিতা লিখেছেন। ভাষণের মধ্যেই সবকিছু তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু একজন চিরজীবী বাঙালি। তিনি আমাদের একটি জাতি রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে যে কাণ্ডটি ঘটেছিল, তিনি কখনও বিশ্বাস করেননি বাঙালি এমন করতে পারে। বঙ্গবন্ধুর পরিবার পুরো জাতিতে ছড়িয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু একটি কবিতা না লিখে তিনি হাজার কবিতার জন্ম দিয়েছেন। ৭ মার্চের একটি ভাষণের মাধ্যমে তিনি সবকিছু তুলে ধরেছেন। যতদিন পর্যন্ত মানুষ বাংলা ভাষার কথা বলবে, ততদিন পর্যন্ত বাঙালি থাকবে। নান্দনিক রাষ্ট্র দর্শনের সূত্র বঙ্গবন্ধু চিন থেকে পেয়েছিলেন; এটি প্রতিষ্ঠা করা দরকার।’
বিশিষ্ট সাংবাদিক আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে ও নাট্যব্যক্তিত্ব মু. আনোয়ার হোসেন রনি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন লোকসংস্কৃতি গবেষক, কবি ও বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতান।
আরও আলোচনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, কবি ড. মোস্তাক আহমাদ দীন ও লোকসংস্কৃতি গবেষক সুমনকুমার দাশ।
এছাড়াও প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।