কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার (২১) মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, তদন্তে এমনি তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরার আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন।
মামলা থেকে আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। বুধবার (১৯ অক্টোবর) বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘আমরা মামলাটির বিষয়ে আত্মহত্যা করেছে কি না, এ বিষয়টি তদন্ত করিনি। আমাদের দায়িত্ব ছিল মুনিয়া ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না। আমরা তদন্তে যা পেয়েছি, তা-ই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কলেজ শিক্ষার্থী মুনিয়া ও বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি আনভীর তারা দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক। শারীরিক সম্পর্ক যা হয়েছে তাদের দুজনের মধ্যে স্বেচ্ছায় হয়েছে। এখানে ধর্ষণের বিষয়টি আমাদের তদন্তে আসেনি। আমাদের তদন্তে আমরা ধর্ষণের আলামত পাইনি। যেহেতু আমরা ধর্ষণের আলামত পাইনি, সে কারণে আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি আদালতে।’
উল্লেখ্য, মুনিয়া মিরপুরের একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবার নাম মৃত শফিকুর রহমান। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের দক্ষিণপাড়া উজির দিঘি এলাকায়। তিনি গুলশান দুই নম্বর এভিনিউর ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর প্লটের বি/৩ ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। গত বছরের ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া ‘আত্মহত্যা’য় প্ররোচনার অভিযোগ এনে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক গ্রুপ বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অব্যাহতি পান সায়েম সোবহান আনভীর।
পরে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর নুসরাত জাহান বাদী হয়ে মুনিয়াকে ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা করেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ আট জনকে আসামি করা হয়। আদালত গুলশান থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।