‘মিয়ানমারের মর্টারশেল ভুলক্রমে নাকি উসকানিমূলক, খতিয়ে দেখা হচ্ছে’

বাংলাদেশের সীমানায় মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক আইন ও প্রটোকলের আলোকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা মিয়ানমারের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ফলে ভুলক্রমে ঘটেছে নাকি উসকানিমূলক, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তিনি সচিবালয়ে তার দফতরে ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন।

গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শুরুতেই বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে জবাব চেয়েছিল এবং এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে এবং প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। তখন মিয়ানমার জানিয়েছিল মর্টারশেল ভুলক্রমে বাংলাদেশের সীমানায় গিয়ে পড়ে। ভবিষ্যতে তারা সতর্ক থাকবেন বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছিলেন। আবারও একই ঘটনা ঘটায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন ও প্রটোকলের আলোকে খতিয়ে দেখছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র, এদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি শেখ হাসিনা সরকারের কাছে নিজের অস্তিত্বের মতো। বাংলাদেশ চায় যে কোনও সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকালও লন্ডনে এ বিষয়ে কথা বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিদেশিদের কাছে নালিশ আর প্রকাশ্যে বিভিন্ন দূতাবাসে সাহায্য চাওয়াই বিএনপির মেরুদণ্ডহীন রাজনীতির সুস্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

দেশ পরিচালনায় নতজানু হওয়ার নজির আওয়ামী লীগের নেই, নতজানু হওয়ার নজির রয়েছে বিএনপির মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কথায় কথায় দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে আর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের অনুরোধ করে।

বিএনপি নতজানু, ভঙ্গুর, পরনির্ভর একটি রাজনৈতিক দল আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, বিএনপি দেশকে পরনির্ভরশীল ও নতজানু দেখতে চায় তাঁবেদার হয়ে থাকতে চায় দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন অন্যদিকে আওয়ামী লীগ চায় দেশকে একটি মর্যাদাশীল, সমৃদ্ধ অবস্থানে উন্নতী করতে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নানান অপকর্মের জন্য দেশের মানুষ এখনও বিএনপির উপর ক্ষুব্ধ , তারা আবারও সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। তার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং পুলিশকে উসকানি দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতারা একদিকে বলছে তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, আবার যখন সুযোগ পায় তখন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন না করে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিচ্ছেন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পুলিশকে আক্রমণের টার্গেট করে নিয়েছে তারা।’ বিএনপিকে আন্দোলনের নামে ‘নৈরাজ্য সৃষ্টি’ থেকে সরে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তার দফতরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিস্কি।

এসময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে সড়ক উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সাক্ষাৎকালে বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং দু’দেশের মধ্যকার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়েও আলোচনা হয়।