মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা বাড়ল আরও ছয় মাস

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাস বাড়ানোর আবেদন মঞ্জুর করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদ। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে আরও ছয় মাসের জন্য ঘোষিত জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। এরপর দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়াবেন বলে জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্স

এ দিনই জান্তা সরকারের আরও কিছু সদস্য এবং প্রথমবার দেশটির জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার খবর এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার দুই বছর পূর্ণ করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নোবেলজয়ী নেতা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর শান্তিপূর্ণ গণবিক্ষোভ শুরু হয়। এর পর থেকে চলমান বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সামরিক বাহিনী। বিরোধীদের দমাতে বিমান হামলার মতো পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তবে এমন কঠোর দমন-পীড়নের মুখে প্রতিরোধ গড়ে যাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।

অভ্যুত্থানবিরোধী বাহিনী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নগরের কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা যখনই সামরিক বাহিনীকে হটাতে সক্ষম হয়, তখনই সেনাবাহিনীর কামান ও বিমান শক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া অঞ্চলগুলো ধরে রাখা কঠিন করে তোলে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) মুখপাত্র তাও নি বলেন, আমরা যদি কোনো এলাকা দখলও করে ফেলি, বিমান প্রতিরক্ষা ছাড়া তা নিয়ন্ত্রণ মুশকিল হয়ে পড়ছে। কারণ সামরিক বাহিনী বিমান হামলা বাড়িয়েছে।

চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের মুখপাত্র হেটেট নি বলেন, বিপ্লব যত শক্তিশালী হবে, সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা তত বাড়বে। আমরা কোনোভাবেই পিছু হটব না। সামরিক বাহিনীকে উৎখাতে জনগণের সঙ্গে যুদ্ধে নামব।

অভ্যুত্থানের দুই বছর পূর্তির দিনে গতকাল বুধবার ‘নীরব ধর্মঘট’ পালন করেছেন মিয়ানারের গণতন্ত্রপন্থি কর্মীরা। এদিন জনসাধারণকে বাড়ির ভেতরে থাকা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আহ্বান জানান তাঁরা। রাস্তাঘাটে সেভাবে সাধারণ মানুষের চলাচল দেখা যায়নি। তবে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েকশ বিক্ষোভকারী মাথায় লাল কাপড় বেঁধে এবং প্ল্যাকার্ড হাতে মিয়ানমার দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেন।

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট গতকাল দেশটির ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন, খনি কোম্পানি, জ্বালানি বিষয়ক কর্মকর্তা এবং সাবেক কয়েকজন সেবা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।