‘মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা বাস্তবায়ন সম্ভব’


এফআইভিডিবিতে বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি চালু


পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘দেশের মানবসম্পদকে কাজে লাগানো গেলে সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব। তাই, দেশের তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

শনিবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় শহরতলীর খাদিমনগরে ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) আয়োজিত শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বেসরকারি এই সংস্থার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি-২০২১, যেহীন আহমদ শিক্ষা পুরস্কার ও এফআইভিডিবি শিক্ষাবৃত্তির ৩৪ লাখ ১৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

এফআইভিডিবি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ সাফওয়ান চৌধুরীর সভাপতিত্বে যেহীন আহমদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতির সোনার বাংলা গড়ার মিশন গ্রহণ করেছেন। যেখানে ধনী-দারিদ্র্যের আকাশসম পার্থক্য থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘অতিদারিদ্রের সংখ্যা পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে দেশ দারিদ্রমুক্ত বলে গণ্য হয়। আমাদের দেশে এখন অতিদারিদ্রের সংখ্যা সাড়ে ১০ শতাংশ। কোভিডের কারণে দারিদ্র্যের হার কমছে না। তবে, আমরা লক্ষ্য বাস্তবায়নে সফল হব।’

তিনি আরও বলেন, ‘কুয়েত, রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ লোকবল নিতে আগ্রহী। আমরা সেভাবে লোকবল পাচ্ছি না। অনেক স্কলারশিপও পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে জানে না বলে আবেদন করেন না।’

শিক্ষাবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সময়কে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান সময় ‘গোল্ডেন অব গড’ তথা সৃষ্টিকর্তার উপহার। নিজেদেরকে আরও বড় করতে হবে পরিশ্রম ও সময়ের সদ্যবহারের মাধ্যমে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান, এফআইভিডিবি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন, নির্বাহী পরিচালক বজলে মোস্তফা রাজী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি-২০২১ চালু করা হয়েছে। এজন্য মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত তিনজন এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দুইজন শিক্ষার্থীকে আগামী চার বছর প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক মরহুম যেহীন আহমদের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘যেহীন আহমদ শিক্ষা পুরস্কার’ প্রবর্তন করা হয়েছে। সমাজের পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর মেধাবি মেয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে ও শিক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে এই বৃত্তি প্রদান করা হবে। এ বছর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে এসএসসি উত্তীর্ণ পাত্র সম্প্রদায়ের একজন মেধাবি শিক্ষার্থীকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করা হবে।

এছাড়াও এফআইভিডিবি’র মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইজনকে শতভাগ, পাঁচজনকে ৫০ শতাংশ, পাঁচজনকে ৪০ শতাংশ এবং ২৩ জনকে ৩০ শতাংশ করে তিন বছরে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বৃত্তিপ্রাপ্তদের হাতে চেক তুলে দেন। ভবিষ্যতে এ বৃত্তির পরিমাণ আরো বাড়ানো হবে বলে জানান আয়োজকরা।