যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতন- আমাদের দেশে এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। পত্র-পত্রিকায়ও এরকম সংবাদ প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে। কিন্তু এবার একই ইস্যুতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের মাধবপুরে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, মাধবপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফিরোজ মিয়া খানের ছেলে ইকবাল খাঁনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে বিউটি আক্তারের সঙ্গে। ২০২১ সালে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ইসলামি নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকলেও একসময় স্বামী ইকবাল খানকে তার স্ত্রী বিউটি আক্তার ৩ শতক জায়গা লিখে দিতে বলেন। কিন্তু ইকবাল স্ত্রীর কথামতো তার নামে জায়গা লিখে না দেওয়ায় শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে বিউটি আক্তার চলে যান তার বাবার বাড়িতে। সেখানে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাসিরনগর আদালতে ইকবাল খান ও তার পিতা ফিরোজ খানের নামে একটি যৌতুকের মামলা করেন তিনি। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমালে নিয়ে ইকবাল খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অপরদিকে মামলাটি আপসে নিষ্পত্তি করার জন্য স্থানীয় লোকজন কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও বিউটি আক্তারের পরিবার জায়গা না দিলে মামলা আপসে নিষ্পত্তি করবে না বলে জানিয়ে দেয়।
পরে ইকবাল খান বাধ্য হয়ে স্ত্রী বিউটি আক্তার, শ্বশুর দুলাল মিয়া ও শ্বাশুড়ি শারমিন বেগমের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
এদিকে, বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ উভয়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ডাকে বিউটি আক্তারের পরিবার সাড়া দেয়নি।
ইকবাল খান জানান, বিউটির সঙ্গে সম্পর্কের পর থেকেই তার পরিবার বিভিন্ন ইস্যুতে টাকা ধার নেয়। পরবর্তীতে ওই টাকা পরিশোধ করবে বলে তাকে আশ্বস্ত করে। এক পর্যায়ে অর্থ পরিশোধ করার প্রলোভন দেখিয়ে বিউটির সঙ্গে তার বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর বিউটি স্বর্ণালংকার নিয়ে তার মায়ের সাথে থাকতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে বিউটি ও তার পরিবার বিউটির নামে জায়গা লিখে দিতে চাপ দিতে শুরু করে। ইকবাল জায়গা না দেওয়ায় শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তখন বিউটি তার মা-বাবার পরামর্শে আদালতে ইকবালের নামে যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
ইকবাল খান আরও জানান, এই সমাজে অনেক পুরুষক বিনা অপরাধে স্ত্রীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সমাজে অনেক পুরুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু কেউ লজ্জায় বলতে পারছে না।
তিনি জানান, বিউটির পরিবার ইকবালের কাছে যে জায়গা চেয়েছে সেগুলোর ম্যাসেজের স্ক্রিনশট ও তাদের এলাকার একজন জনপ্রতিনিধির কথা রেকর্ড রয়েছে।