মাধবপুরে কিশোর গ্যাংয়ের নির্যাতনে প্রাণ দিলো স্কুলছাত্রী

হবিগঞ্জের মাধবপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ক্রমাগত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিষপানের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেল মাসুমা আক্তার (১৫)।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মাসুমার মৃত্যু হয়। মাসুমা আক্তার উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের মরতুজ আলীর মেয়ে ও আন্দিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

মাসুমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আন্দিউড়া গ্রামের মুন পাঠানের ছেলে নয়নের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে মাসুমাকে নির্যাতন করছিল। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কিশোরী ক্লাবে গান শিখতে যায় মাসুমা। সেখানে আন্দিউড়া গ্রামের নয়নের নেতৃত্বে ইমন, বিজয়, আরমান নামে ৪ বখাটে বিদ্যালয়ের কক্ষে ঢুকে মাসুমার ওপর শারীরিক নির্যাতন শেষে তাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে।

পরে স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তায় আবারও মাসুমার হাত ধরে টানাটানি করে ভাবি বলে সম্বোধন করে ওই বখাটেরা। বাড়িতে ফিরে সন্ধ্যার পর বিষপান করে মাসুমা। এরপর তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে শনিবার সকালে মাসুমা না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়।

মাসুমার মা মাসকুরা বেগম জানান, গত এক বছর ধরে আন্দিউড়া গ্রামের মুন পাঠানের ছেলে বখাটে কিশোর নয়নের নেতৃত্বে বখাটেরা বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে মাসুমাকে উত্যক্ত করে আসছে। তাদের অভিভাবকের কাছে বিচার দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। শুক্রবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে মাসুমা মন খারাপ করে বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকে। পরে বখাটেদের অপমান সইতে না পেরে হঠাৎ বিষপান করে।

মাসুমার বাবা মরতুজ আলী জানান, মাসুমাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মেয়ের এ পরিণতির জন্য তিনি নয়নসহ অন্য বখাটেদের উপযুক্ত বিচার চান।

এদিকে অভিযুক্ত কিশোর নয়নের মা বাবা আত্মীয়-স্বজন গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মর্গে ময়নাতদন্তের পর শনিবার সন্ধ্যায় আন্দিউড়া গ্রামে মাসুমা আক্তারের নামাজে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।