মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর পায়ে লোহার শিকল, অধ্যক্ষ আটক

পায়ে লোহার শিকল বাধা অবস্থায় নির্যাতিত এক শিশু শিক্ষার্থী রাতের আঁধারে কৌশলে পালাতে গিয়ে টহল পুলিশের হাতে পড়েছে। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে রাতেই থানায় নিয়ে যায়। ১০ বছর বয়সী ওই শিশু শিক্ষার্থীর নাম জাহিদুল হাসান নাঈম।

শনিবার (১৩ জুন) রাতে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর এলাকা থেকে শিশুটি উদ্ধার করা হয়। ওই শিশু নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে ও ওই মাদ্রাসার নাজরা শ্রেণির শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় দাগনভূঞা থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে (৩২) আটক করেছে। তিনি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বড় চাড়িগাও গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও ওই শিশু শিক্ষার্থীর বাবা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, তার ১০ বছর বয়সী ছেলে জাহিদুল হাসানকে চলতি বছরের শুরুতে পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের দেউলিয়া নুরানীয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার নাজরা শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু মাদ্রাসাটিতে প্রায় শিশু জাহিদুলসহ অনেক শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার শিশুটির বাবা তার ছেলেকে দেখতে মাদ্রাসায় যায়। শিশু জাহিদুল তখন মাদ্রাসায় নির্যাতনের বিষয়টি তার বাবাকে জানায় এবং মাদ্রাসায় আর পড়বে না বলেও জানায়। তারপরও শিশুর বাবা শিশুটিকে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় রেখে আসেন। ওই শিক্ষার্থীর বাবা মাদ্রাসা থেকে চলে যাওয়ার পর শিশুর অভিযোগের বিষয়টি অধ্যক্ষ জানতে পারেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে লোহার শিকল দিয়ে বেধেঁ মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করে। ওই রাত ৩টার দিকে শিশুটি বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে রাস্তায় চলে যায়। এসময় দাগনভূঞা থানার পুলিশের একটি টহল দল ওই স্থান দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ রাত ৩টার দিকে রাস্তায় শিকল পরা শিশুটিকে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ বিস্তারিত জেনে শিশুর বাবাকে খবর পাঠায়।

দাগনভূঞা থানার (ওসি) হাসান ইমাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনায় শিশুর পরিবার বা অন্য কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।