মহানবমীতে শান্তিগঞ্জের মণ্ডপে মণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়

দেবী দুর্গা কৈলাশ থেকে এবছর পিত্রালয়ে এসেছে গজে চড়ে। ষষ্ঠী বোধনের মাধ্যমে চার দিন আগে মর্ত্যে এসেছিলেন তিনি। কৈলাশে ফিরবেন নৌকায় চড়ে। যাবার সময় এসেছে। বুধবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ফিরাযাত্রা করবেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। তাই পূজার শেষ সময় দেবী দুর্গার সামনে পরম ভক্তি নিয়ে মাথা ঠুকতে মহানবমীতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার ২২টি পূজা মণ্ডপে ছিলো পূজারীদের উপচে পড়া ভিড়। তবে সকলের চোখেমুখে ছিলো বিষাদের ছাপ। দেবী দুর্গা চলে যাবেন, আবার তাঁকে দেখতে অপেক্ষা করতে হবে একটি বছর। এজন্য বিষাদ কাজ করছিলো ভক্তদের মাঝে।

এবছর জয়কলস ইউনিয়নে সর্বোচ্চ মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। ইউনিয়নের ৮টি মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন ভক্তরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মণ্ডপ হয়েছে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে। ৫টি মণ্ডপের মাধ্যমে দেবীর পায়ে মাথা ঠুকেছেন ভক্তকূল। পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে ৩টি, দরগাপাশা ও পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে ২টি করে মোট ৪টি, পাথারিয়া ও পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে ১টি করে মোট ২টি মণ্ডপে দেবী দূর্গার আরাধনায় ব্যস্ত ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শান্তিগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সমস্ত উপজেলায় ২২টি মণ্ডপের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হয়েছে। এজন্য উপজেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, উপজেলা প্রশাসনসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান তারা।

তারা জানান, আগামীকাল সকাল থেকে বিভিন্ন সময় দরগাপাশায় ২টি, বীরগাঁও, পাগলা, সদরপুর, তেঘরিয়া, জয়কলস ও দেবগ্রামে ১টি করে ৬টিসহ মোট ৮টি মণ্ডপ ছাড়া বাকী ১৪টি মণ্ডপ বিভিন্ন দিঘী, জলাশয় ও নদীতে বিসর্জন করা হবে। পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ৩টি মণ্ডপ পাগলা সংলগ্ন ডাবরের পুরোনো ফেরিঘাটে, জয়কলসের কয়েকটি মণ্ডপ নাইন্দা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে।

পঞ্চপাড়া অনির্বান পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দিপক দে বলেন, ‘দেবী দর্শনে এসে ভালো লাগছে। আইনশৃঙ্খলার দিকটি অতন্ত্য প্রশংসনীয়। নির্বিঘ্নে চারটি দিন ঘুরাঘুরি করেছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এজন্য শান্তিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।’

অপু পাল ও রুপন পাল জানান, অত্যন্ত সুন্দরভাবে মহানবমী উদযাপন হচ্ছে। তবে কিছুটা বিষাদও আছে। আগামীকাল (বুধবার) দেবী বিসর্জন হবে। পূজার শেষ দিন। আমরা চাই, দেবীর আগমনে পৃথিবী শান্তিময় হোক।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্যোতি ভূষণ তালুকদার ঝন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত চৌধুরী টপ্পা বলেন, মহা নবমীর শুভেচ্ছা। অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে এবছর পূজা উদযাপন করতে পেরেছি। এটা সম্ভব হয়েছে সকলের সহযোগিতায়। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আগামীকাল (আজ) মহা দশমী। বিসর্জনের দিয়ে শেষ হবে এবারের শারদ উৎসব। এজন্য কিছুটা বিষাদও অন্তরে কাজ করছে।

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়ীত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। এখনো করছি। আমরা মাঠে ছিলাম। কাজ করেছি। সব সময় আমাদের টিম মণ্ডপে মণ্ডপে টহলে ছিলো। দুর্গা বিসর্জনের আগ পর্যন্ত আমরা তৎপর আছি। এ বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।’