প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মন্ত্রিসভায় নতুন আরও সাতজন প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হচ্ছেন। শুক্রবার (১ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শুক্রবার সাতজনকে সরকারের প্রতিমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথ নেবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। তবে নতুনদের মধ্যে সিলেটের আলোচিত কাউকেই রাখা হয়নি। এতে হতাশ হতে হলো স্থানীয় নেতাকর্মীদের।
মন্ত্রিসভায় নতুন সদস্যরা হলেন – শহীদুজ্জামান সরকার (নওগাঁ-২), মো. আব্দুল ওয়াদুদ (রাজশাহী-৫), নজরুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), বেগম রোকেয়া সুলতানা (সংরক্ষিত মহিলা আসন), বেগম শামসুন নাহার (সংরক্ষিত মহিলা আসন), বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান (সংরক্ষিত মহিলা আসন) ও বেগম নাহিদ ইজাহার খান।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। গত ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে শপথ নেন নতুন মন্ত্রিসভার ৩৭ সদস্য। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৩৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।
এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি। এরপর মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের শপথ করান তিনি। বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
ওইদিন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন আ. ক. ম মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কাদের, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, আসাদুজ্জামান খান, ডা. দীপু মনি, মো. তাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুখ খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, আবদুস শহীদ, সাধন চন্দ্র মজুমদার, র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, আব্দুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আবদুস সালাম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, ফরিদুল হক খান, জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নাজমুল হাসান পাপন, ইয়াফেস ওসমান, ড. সামন্ত লাল সেন।
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন বেগম সিমিন হোসেন রিমি, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ পলক, মো. আলী আরাফাত, মহিবুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহিদ ফারুক, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রুমানা আলী, শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আহসানুল ইসলাম।
এবার নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন আগের মন্ত্রিসভার ১৪ মন্ত্রী, নয়জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী। আলোচিত মন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সিলেট ১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে গেলো দফায় দায়িত্ব পালন করা এ কে আব্দুল মোমেন, সুনামগঞ্জ ৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে বিগত ৫ বছর পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এম এ মান্নান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এবং সিলেটের আরেক সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করা ইমরান আহমদ। গেলো কিছুদিন ধরে ইমরান আহমদ, একে আব্দুল মোমেন ও সুনামগঞ্জের এমএ মান্নানকে নিয়ে আলোচনা চলছিলো। তবে এই আলোচনা অনেকটা হতাশায় রুপ নিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, স্থানীয় সরকার, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা।
এছাড়া গতবারের তিন উপমন্ত্রীর মধ্যে দুজনই এবার বাদ পড়েছেন। তারা হলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। টেকনোক্র্যাট পদ থেকে পদত্যাগ করা ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমও এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
সিলেট ভয়েস/ ডিপি/ এমএআই