মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কাজ করছে সরকার

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে প্রথাগত অভিবাসন-কেন্দ্রিক সম্পর্কের বাইরে গিয়ে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য সরকার অনেকদিন ধরে কাজ করছে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর কিছুটা ধীরগতি থাকলেও সেটাকে বেগবান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বছর উভয়পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সফর রয়েছে, যেখানে কেন্দ্রবিন্দুতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো সবসময় আমাদের কাছে বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমাদের বড় লক্ষ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি। এর ফলে একদিকে আমাদের বাজার সম্প্রসারিত হবে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভীত মজবুত হবে।’

বিষয়টিকে উভয়পক্ষের জন্য লাভজনক অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছি। সামনের মাসগুলোতে আরও বৈঠক হবে।’

গত মাসের শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে কক্সবাজারে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অ্যাসিস্ট্যান্ট মিনিস্টার আব্দুল নাসের জামাল আল সালির সঙ্গে বৈঠকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়।

২০২৪ সালে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হবে জানিয়ে মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘আমরা শুধু উদযাপনের জন্য নয়, এটিকে আরও বড় আকারে দেখতে চাই। দুই পক্ষ এ ব্যাপারে একমত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের রফতানি ওই দেশে কম, কিন্তু এটিকে বাড়ানোর অনেক সুযোগ আছে। ওই দেশের আরএকে কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া তাদের অন্যতম বড় কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতেও সহযোগিতা সুযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে উভয়পক্ষ সম্পৃক্ত থাকলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানো সম্ভব।’

সৌদি আরব

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার সৌদি আরব। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। সম্প্রতি ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ গত মার্চে ঢাকা সফর করেন। বাংলাদেশে ১ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে তারা আলোচনা করছে।’

এ বিষয়ে মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘আগামী মাসের মধ্যে দুটি প্রতিনিধি দলের ঢাকায় বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে সৌদি ডেপুটি ইন্টেরিওর মন্ত্রী এবং অপরটি জয়েন্ট ইকোনোমিক কমিশনের বৈঠক।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো। এছাড়া তারা যে সবুজায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে কোটি কোটি গাছ তারা রোপণ করবে, এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ কারিগরী সহায়তা দিতে পারে।’

বাহরাইন

প্রতিবছরের মতো এ বছরও মানামা ডায়ালগ করতে যাচ্ছে বাহরাইন। যেখানে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার জাতীয় নেতা, মন্ত্রী ও নীতি-নির্ধারকরা অংশ নিয়ে থাকেন। এ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আয়োজকরা।

মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠান নভেম্বরে হবে। আমাদের হাতে সময় আছে।’ এছাড়া কাতারের সঙ্গে আগামী মাসে এবং কুয়েতের সঙ্গে নভেম্বরে ফরেন অফিস কনসালটেশন করার কথা আছে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘ওই সব দেশের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি ভালো ফল পাওয়া যাবে।’