মধ্যনগরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন ইসি।
গত ১০ জুন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এই নির্দেশ দেন।
নির্দেশনার অনুলিপি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার, সুনামগঞ্জ নির্বাচন অফিস, সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও রিটার্নিং অফিসার, মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একান্ত সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব’র একান্ত সচিব, মধ্যনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়- মধ্যনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমানের ছেলে মাসুকুর রহমান নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়েরপূর্বক জানিয়েছেন যে, নির্বাচন পরবর্তী গত ৭ জুনের পর থেকে নিকটতম চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সাইদুর রহমান’র কর্মীদের উপর ভয়ভীতি প্রদর্শন ও একজন কর্মী-সমর্থক হারুন মিয়াকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় তার পিতা সাইদুর রহমান তাৎক্ষণিকভাবে মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবগত করলে একজন এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। সাইদুর রহমান এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেন।
বিকাল ৫টার দিকে তার পিতা সাইদুর রহমান, চাচা আজিজুর রহমান, ছোট ভাই অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান ঝিনুকসহ পরিবারের আরও কিছু সদস্য ও স্বজনেরা দাতিয়াপাড়া গ্রামে বাড়ির সামনে বসে আলাপ করছিলেন। এ সময় বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া, তার ভাতিজা আজিম মাহমুদসহ অন্যান্যরা বাড়ির রাস্তা ধরে আসতে দেখে তাঁর পিতাসহ অন্যান্যরা বিজয়ী প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে যান। কিন্তু কাছাকাছি পৌঁছানো মাত্র আজিম মাহমুদের নেতৃত্বে একদল সহযোগী ধারালো অস্ত্র দা ও রামদা নিয়ে তাঁর পিতাসহ সবার উপর অতর্কিতে হামলা চালান।
এ সময় বাড়ির উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকেও দুইদল হামলাকারী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল থেকে দূরে সরে যান। হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তার পিতার মাথায় দুইটি ও হাতে একটি কোপ দেয়, তার ছোট ভাইয়ের মাথায় একটি ও হাতে একটি কোপ দেয়, তার চাচার মাথায় একটি ও হাতে একটি কোপ, তার মামাতো ভাই কামাল আহমেদের পায়ে একটি কোপ, তার ভাতিজা রানা মিয়ার হাতে একটি কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করে।
এছাড়াও সকলের শরীরের নানা অংশে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। এ সময় বাড়িতে থাকা অন্যান্যরা এগিয়ে এসে আক্রান্তদের রক্ষার জন্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে হামলাকারী দুয়েকজন আহত হন এবং বাকিরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এই সুযোগে আহতদের বাড়ির ভিতরে নিয়ে এসে ক্ষতস্থান কাপড় দিয়ে বেধে রক্তক্ষরণ থামানোর চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে হামলাকারীরা বাড়ির চতুর্দিকে আবারও অবস্থান নেয়। এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই মধ্যনগর থানা থেকে আগে প্রেরিত একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের পক্ষে অবস্থান নেন।
উল্লেখ্য, আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া রংপুর রেঞ্জ পুলিশের বর্তমান ডিআইজি (অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল বাতেনের আপন বড় ভাই।