ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ‘মদের আসর’ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দিনগত রাত দেড়টার দিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ কর্মী আহত হয়েছেন বলে হল ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হল ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী জানান, রাত ১১টার দিকে হল ছাত্রলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন রানার সক্রিয় কর্মী মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফরিদ সভাপতি রানার কাছ থেকে টাকা নিয়ে মদ নিয়ে আসেন। রাত ১টা পর্যন্ত ফরিদ ও তার গ্রুপের কর্মীরা আসরে বসে মদ পান করেন।
এদিকে, সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের গ্রুপের রাহী, শান্তসহ প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকর্মী ওই হলের ছাদে বসে বিয়ার খাচ্ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে মদ ও বিয়ার খাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় দুই পক্ষ। বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সভাপতির দলের ফরিদ সাধারণ সম্পাদক দলের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহীকে চড় দিলে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এতে গুরুতর আহত হন সাধারণ সম্পাদকের দলের শান্ত নামের এক শিক্ষার্থী।
পরিস্থিতির অবনতি হলে রানার দলের প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত সোপান ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অথৈ প্রথম বর্ষের ছাত্রদের স্ট্যাম্প ও রড নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেন। এতে সভাপতি রানার দলের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন ও সাধারণ সম্পাদক রুবেলের দলের ৫০ জনের মতো প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রড ও স্ট্যাম্প নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর সংঘর্ষে ১০ কর্মী আহত হন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এগিয়ে আসেন সভাপতি রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল। পরে রাত আড়াইটার দিকে তারা আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
মদের আসরের বিষয়টি অস্বীকার করেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা। তিনি বলেন, মদের আসরের বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা। হলের সিনিয়র-জুনিয়রদের মাঝে তর্কাতর্কি হয়। পরে গিয়ে তাদের থামাই। তবে সেখানে মাদক সেবনের কোনো আলামত পাইনি। তবে কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব এবং হল প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনের ফোনে একাধিকার কল করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। সকাল থেকেই হলের হাউজ টিউটর, স্টাফ, ছাত্রসহ হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সবার সঙ্গে কথা বলে যেটা জেনেছি, হলের ছাদে ওঠা ও গান-বাজনা নিয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের মাঝে ঝগড়ার ঘটনা ঘটেছে। আমরা আপাতত হলের ছাদে ওঠা নিষিদ্ধ করে দিয়েছি এবং তালা দিচ্ছি। আর হল প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে।