নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত পাঁচ সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), ত্রাণ ও ভিজিডি কর্মসূচির মতো উন্নয়ন কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নিষেধাজ্ঞাটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ মে) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত ভিন্ন দুটি চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
সম্প্রতি পাঁচ সিটি করপোরেশনের তফসিল ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। পরে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন নিশ্চিত করতে ব্যাপক চিঠি চালাচালি হয়। সেই সঙ্গে প্রার্থীদেরও ঢাকায় তলব করে বর্তমান কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী, ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন ভোট হবে রাজশাহী ও সিলেটে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ৪ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন প্রকার চাঁদা বা অনুদান প্রদান করতে করতে পারবেন না।
এ অপরাধের জন্য ছয়মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন বলে নির্দেশনায় বলা হয়। কোনো দল এই বিধি লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলেও জানানো হয়।
নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্দেশনায় বলা হয়, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কোনো সম্পত্তি- অফিস, যানবাহন, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ওয়াকিটকি বা অন্য কোনো সুযোগ সুবিধা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া কোনো প্রার্থী করপোরেশনের দরপত্র আহবান, গ্রহণ কিংবা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন না।
আচরণ বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ২৫ অনুসারে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উম্মোচন করা যাবে না। সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর বা সংশ্লিষ্ট এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না।
নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় অনুদান, ভিজিডি, কাবিখা, ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ প্রদান করা নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে পাঠানো পৃথক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যু কার্যক্রমসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।
সেই সঙ্গে কোন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ তা পরিচালনা করতে হবে।