পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের বেশ কিছু অংশে এখনও অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ভারী বর্ষণের জেরে বেলুচিস্তানে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা এবং প্রধান মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের কিছু অংশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় প্রদেশজুড়ে কমপক্ষে আরও ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে করে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রদেশে প্রবল বর্ষার কারণে গত দুই দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে।
অন্যদিকে বুধবারের তুলনায় প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরে বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমেছে। তবে তারপরও শহরটিতে আরও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে করে গত দুই দিনে ভারী বর্ষণের জেরে লাহোরে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১২ জনে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, গুজরানওয়ালায় ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। চাকওয়াল এবং শেখুপুরায় তিনজন করে এবং ঝাং-এ একজন ও ফয়সালাবাদে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া বৃষ্টি-সম্পর্কিত নানা ঘটনায় ৪৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩২ জন গুরুতর এবং ১৭ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ১৩টি জেলায় বৃষ্টি হয়েছে এবং আবহাওয়া কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃষ্টি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং বৃষ্টির তীব্রতাও বাড়বে।
এই পরিস্থিতিতে প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ ডেরা গাজি খান এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করছে। মূলত বেলুচিস্তানের পাহাড় থেকে প্রদেশে প্রবেশ করা পাহাড়ি ঢলের কারণে এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে এবং এটি পাহাড়ের পাদদেশে থাকা সকল শহরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
বেলুচিস্তানে আকস্মিক বন্যা :
এদিকে বেলুচিস্তান প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। মূলত ভারী বর্ষণের জেরে এই বন্যা দেখা দিয়েছে এবং এর ফলে প্রদেশটিকে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের সাথে সংযুক্তকারী কিছু মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া মৌসুমী বৃষ্টিপাত নিয়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বেলুচিস্তান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
পিডিএমএ মহাপরিচালক জাহানজেব খান বৃহস্পতিবার কোয়েটায় বলেছেন, ‘মৌসুমী বৃষ্টি ও নদীতে আকস্মিক বন্যার কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আমরা সমস্ত জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা পাঠিয়েছি এবং ত্রাণ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছি।’
এর আগে গত বুধবার সিবি, কালাত, ঝাব, বারখান, লোরালাই, মুসাখাইল, আওয়ারান, খুজদার, নাসিরাবাদ এবং লাসবেলা জেলায় দমকা হাওয়া ও বজ্রঝড়সহ ভারী বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। পিংরা ব্রিজের কাছে কোয়েটা-সিবি হাইওয়েতে আকস্মিক বন্যার কারণে বোলানে কোয়েটা এবং সিবির মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্রিজের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সেতুর দুই পাশে বিপুল সংখ্যক বাস, যাত্রীবাহী কোচ, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, হারনাই, জিয়ারাত এবং সঞ্জাভিতে ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যার কারণে জনগণকে আপাতত ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে বোলান ও সিবির কর্তৃপক্ষ।