আগরতলা-আখাউড়া ও হরিদাসপুর-বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত বাস সার্ভিস আজ শুক্রবার সকালে পুনরায় শুরু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বিআরটিসি মতিঝিল আন্তর্জাতিক বাস ডিপো থেকে শ্যামলী এন আর ট্র্যাভেলসের উদ্যোগে ২২ যাত্রী নিয়ে এই সেবা চালু হয়।
প্রধান অতিথি থেকে এর উদ্বোধন করেছেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম। এ সময় বিআরটিসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘উন্নতমানের গাড়ি প্রস্তুত হলে বিআরটিসির নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে গাড়ি চলাচল শুরু হবে।’
স্বাভাবিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের ৫টি আন্তঃসীমান্ত রুটে বাস চলাচল করতো। এগুলো হলো- ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা, ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট-শিলং-গুয়াহাটি-ঢাকা, আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা-আগরতলা এবং ঢাকা-খুলনা-কলকাতা-ঢাকা।
পাঁচটি রুটের মধ্যে ঢাকা-সিলেট-শিলং-গুয়াহাটি-ঢাকা ব্যতীত বাকি চারটি রুটে শুক্রবার থেকেই বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে।
ঢাকা-সিলেট-শিলং-গুয়াহাটি-ঢাকা গাড়িটি চালু হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন শ্যামলী এন আর ট্র্যাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ।
তিনি বলেন, ‘এটি ছাড়া বাকি ৪টি রুটে আজ (শুক্রবার) থেকেই বাস সেবা চালু হচ্ছে। বর্ডারে ইন্ডিয়ার সাইডে কিছু কাজ চলছে, সেগুলো হলেই চালু ওই রুটেও বাস চলাচল শুরু হবে।’
উদ্বোধনী দিনে দুটো বাস ঢাকা ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটের বাসটি ২২ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে। আর রাত ১০টায় ছেড়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-আগরতলা রুটের বাসটি।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল বিআরটিসির সিদ্ধান্ত জানানোর পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে আজকে বাস সার্ভিস চালু করার কারণে যাত্রী সংখ্যা কম। এ রুটে যাত্রীদের চাহিদা রয়েছে। যাত্রীর সংখ্যাটা বাড়বে।’
রাকেশ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী, রোববার দু’দেশের মধ্যে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। বাংলাদেশ থেকে সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার বাসগুলো ছেড়ে যাবে। পরের দিনগুলোতে সেগুলো আবার বাংলাদেশে ফিরে আসবে। আর মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবারে ভারত সরকারের বাসগুলো বাংলাদেশে ঢুকবে। সেগুলোও বিপরীত দিনে বাংলাদেশ থেকে ছেড়ে যাবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এবং যুগ্মসচিব আনিসুর রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিআরটিসির পরিচালক, জিএম ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২৯ মে দুই দেশের মধ্যে পুনরায় রেল যোগাযোগ চালু হয়।
প্রসঙ্গত, কোভিড মহামারীর কারণে এই বাস সার্ভিস প্রায় দুই বছর যাবত স্থগিত ছিল। বাস সার্ভিস আবারও চালু হওয়ায় দুই দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং মানুষে মানুষে সম্পর্ক জোরালো হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়া গেলে ডাউকি-তামাবিল চেকপোস্ট দিয়ে যথাসময়ে বাস চলাচল শুরু হবে।
উল্লেখ্য, এই দুই দেশের মধ্যে সাশ্রয়ী, জনবান্ধব যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হল এই বাস সার্ভিস যা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।